পারমিতা বক্সী। —ফাইল চিত্র।
স্বামীর চাকরি বেঙ্গালুরুতে। তিনি কর্মসূত্রে থাকতেন পুণেতে। এক সঙ্গে সংসার করার জন্য চাকরি ছাড়তে চেয়েছিলেন উত্তরপাড়ার বাসিন্দা বছর ঊনত্রিশের পারমিতা বক্সী। কিন্তু তাতে রাজি হননি স্বামী। অভিযোগ, এর জেরেই শুরু হয় অত্যাচার। গত শুক্রবার সকালে উত্তরপাড়ার মাখলায় নিজেদের ফ্ল্যাটে গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় পারমিতার মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ফ্ল্যাটে পারমিতার একটি ডায়েরি মিলেছে। তাতে মৃত্যুর জন্য পারমিতা দায়ী করে গিয়েছেন স্বামী কৌস্তুভকে।
পুলিশ জানিয়েছে, পারমিতার পরিবারের তরফে কৌস্তুভ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, পারমিতার পরিবার উত্তরপাড়ার মাখলায় থাকে। চলতি বছরের জুনে তাঁর বিয়ে হয় হাওড়া বালির বাসিন্দা কৌস্তুভ বক্সীর সঙ্গে। বিয়ের পর পারমিতা চাকরি পান পুণেতে। মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কৌস্তুভ প্রথমে বলেছিলেন, তিন মাসের মধ্যে তিনি বদলি নিয়ে পুণেতে চলে আসবেন। এই কথা শুনে পুণেতে যেতে রাজি হয়েছিলেন পারমিতা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে পারমিতা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তিনি চাকরি ছেড়ে স্বামীর সঙ্গেই থাকবেন। পারমিতার পরিবারের অভিযোগ, এতে রাজি হননি স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। পারমিতার মা বনানীদেবী সোমবার বলেন, ‘‘রোজগারের টাকা শ্বশুরবাড়িতে পাঠাতে হতো পারমিতাকে। পান থেকে চুন খসলে শাশুড়ি আর ননদ অপমান করত। মেয়েকে এমএ পাশ করিয়ে এমনও দেখতে হল!’’ পারমিতার বাবা কালীপদ দাস বলেন, ‘‘আমার মেয়ে পুণেতে একা থাকতে ভয় পেত। তবু কৌস্তুভ ওর কাছে গেল না।’’
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পারমিতা ডায়েরিতে লিখেছেন, ‘‘তোমার বাবা ডিভোর্স দিতে বলেছেন। সেটা পারব না। মুক্তি চেয়েছো, মুক্তি দিলাম। বাঁচার ইচ্ছেটাও চলে গেছে।’’ ডায়েরির অন্য পাতাতেও তিনি তাঁর উপর হওয়া অত্যাচারের কথা লিখে গিয়েছেন বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy