সম্ভার: উদ্ধার হওয়া শব্দবাজি। বুধবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর
এক রাতে হাওড়ার দু’জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হল ১০ হাজার কেজি শব্দবাজি। যার মধ্যে ১৭০০ কেজি শব্দবাজি মিলেছে হাওড়ার বাজি বাজার কমিটির সভাপতির বাড়ি থেকে! পুলিশের মতে, হাওড়া শহর এলাকা থেকে এত বিপুল পরিমাণ শব্দবাজি উদ্ধার সাম্প্রতিক কালে নজিরবিহীন। আর এই ঘটনা প্রমাণ করে দিয়েছে, এত দিন ধরে শব্দবাজির বিরুদ্ধে নানা অনুষ্ঠান, প্রচার বা পুলিশের পদযাত্রা আদপেই কোনও কাজে আসেনি। চোরাপথে শহরের বসতবাড়িতে ঢুকে পড়েছে টন টন শব্দবাজি। পুলিশের সতর্ক নজর এড়িয়ে কী ভাবে এত শব্দবাজি ঢুকল, এই ঘটনায় উঠে গিয়েছে সেই গুরুতর প্রশ্ন।
পুলিশ সূত্রের খবর, শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করতে কালীপুজোর আগে থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। মঙ্গলবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা দফতর শিবপুরের নস্করপাড়া বাইলেনে ডুমুরজলা বাজি বাজারের সভাপতি গোপাল পাত্রের বাড়িতে হানা দেয়। সেখানে তাঁর ভাই অরূপ পাত্রের ঘর থেকে উদ্ধার হয় ১৬৫০ কেজি শব্দবাজি। গ্রেফতার করা হয়েছে অরূপবাবুকে। পুলিশ জানায়, বাজির পারিবারিক ব্যবসা গোপালবাবুদের। অরূপবাবুর নামে দেড়শো কেজি বাজির লাইসেন্স রয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে, জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও পুরসভার নির্দেশে তৈরি হওয়া বাজি বাজার কমিটির সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও গোপালবাবু কী ভাবে বাড়িতে শব্দবাজি মজুত করেছিলেন? উত্তরে গোপালবাবু বলেন, ‘‘ওই বাজির সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। আমি অন্য জায়গায় থাকি। ভাই আলাদা ব্যবসা করে।’’
ওই রাতেই দাশনগর থানা এলাকার কাঁটাপুকুর থার্ড বাইলেনের একটি ভাড়া বাড়িতে হানা দিয়ে উদ্ধার হয় সাড়ে আট হাজার কেজি শব্দবাজি। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় তস্য গলির মধ্যে বসতবাড়িতে মজুত করে রাখা এত বাজি উদ্ধারের পরে চোখ কপালে উঠেছে পুলিশকর্তাদের। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই বাড়িতে কোনও ভাবে আগুন লাগলে গোটা এলাকা উড়ে যেত। দু’টি লরি নিয়ে গিয়ে আমাদের ওই বাজি উদ্ধার করতে হয়েছে।’’ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে বাড়ির মালিক সজল পাত্রকে।
এ দিকে, হাওড়া শহরে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে এত শব্দবাজি উদ্ধার হওয়ার পরে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশি নজরদারি নিয়ে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া অধিকাংশ বাজি শিবকাশীর। সেগুলি সড়কপথে হাওড়া হয়ে বড়বাজারে ঢুকেছিল। তার পরে গোপনে বিক্রি করা হচ্ছিল ব্যবসায়ীদের। কিন্তু সড়কপথে এত তল্লাশির পরেও কী ভাবে শব্দবাজি শহরে ঢুকছে, সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা শুধু বলেছেন, ‘‘বাইরে থেকে আসা সব গাড়ি পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কী ভাবে শব্দবাজি ঢুকছে, আমরা তদন্ত করে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy