প্রতীকী ছবি।
পরপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধা খুনের ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে কলকাতা ও হাওড়া শহরে। প্রতি ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে ওই সব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা প্রায় নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করতেন। এই সব ঘটনার পরে এক দিকে যেমন ওই প্রবীণদের নিরাপত্তা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুলিশ, ঠিক সে ভাবেই এ বার হাওড়া শহরে একা বসবাসকারী প্রবীণদের নিরাপত্তার জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিল হাওড়া সিটি পুলিশ।
প্রবীণদের দেখভালের জন্য ২০১৭ সালে হাওড়া সিটি পুলিশের উদ্যোগে ‘শ্রদ্ধা’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করা হয়। নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিয়ে তৈরি ওই সংগঠনে সদস্য-সদস্যার সংখ্যা ইতিমধ্যে ১৩৯ জন। তাঁদের সদস্যদের ফোন করে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখার পাশাপাশি দুর্গাপুজোয় বাসে করে কলকাতার ঘোরানো এবং খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও করে থাকে পুলিশ। এ বার এই সদস্যদেরই নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করল হাওড়া সিটি পুলিশ।
শনিবার হাওড়ার শরৎ সদনে এক অনুষ্ঠানে সিটি পুলিশের কমিশনার গৌরব শর্মা জানান, শ্রদ্ধার সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের তরফ থেকে একগুচ্ছ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
ঠিক হয়েছে প্রথম পর্যায়ে ওই প্রবীণদের বাড়ি বা আবাসনে ১০০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে বাড়িতে বেড অ্যালার্মের ব্যবস্থা থাকবে। বিপদে পড়ে অ্যালার্ম বাজালেই পাড়া-পড়শি থেকে থানা— সকলেই সাহায্য করতে এগিয়ে আসবেন। এ ছাড়া এলাকার প্রবীণেরা কেমন আছেন তা জানতে প্রতি মাসের দ্বিতীয় শনিবার দুপুরের পরে থানার ওসি বা বরিষ্ঠ অফিসারেরা তাঁদের বাড়িতে যাবেন। ওই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘শ্রদ্ধা পাড়া মিটিং’। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের খোঁজখবর নেবেন থানার পুলিশ আধিকারিকেরা।
এর পাশাপাশি সপ্তাহের সাত দিনই ২৪ ঘণ্টার জন্য নতুন একটি হেল্পলাইনও চালু করা হচ্ছে। যেটির নম্বর ৯০৫১২-০০১০০। শ্রদ্ধার সদস্যেরা সেই নম্বরে ফোন করলেই পুলিশ কন্ট্রোল রুম তাঁদের সহায়তায় এগিয়ে আসবে। শ্রদ্ধার সদস্যদের সকলেরই নম্বর পুলিশ কন্ট্রোল রুমে নথিভুক্ত থাকবে। ফোন আসার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। এ ছাড়াও শ্রদ্ধার প্রবীণ সদস্যেরা যাঁরা একা থাকেন, তাঁদের সাহায্য করার জন্য আরও কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যেমন, স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত তথ্যের ব্যাঙ্ক চালু করা হচ্ছে। অর্থাৎ প্রবীণদের শারীরিক অবস্থা, তাঁদের প্রত্যেকের ডাক্তারি পরীক্ষার যাবতীয় নথি— এই হেলথ রেকর্ড তথ্যভাণ্ডারে জমা থাকবে। যদি কোনও প্রবীণ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে তাঁদের শারীরিক অবস্থার রেকর্ড পাঠানো সম্ভব হবে। যাতে তাঁরা দ্রুত চিকিৎসা পান।
এ ছাড়াও হাওড়া সিটি পুলিশের হাসপাতালের বহির্বিভাগে যাতে শ্রদ্ধার সদস্যেরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও হাওড়া পুলিশের তরফ থেকে করা হবে। এ ছাড়াও হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে যাতে ওই সব প্রবীণ মানুষ সেখানে গেলে অনেকটা কম খরচে চিকিৎসা করাতে পারেন। পুলিশ কমিশনার জানান, দ্বিতীয় দফায় আরও প্রবীণের বাড়িতে বা ফ্ল্যাটে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy