Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

প্লাস্টিক জমা দিলেই মিলবে কফি-শিঙাড়া, কাপড়ের ব্যাগ

হাওড়ায় ইউএনডিপি-র দায়িত্বপ্রাপ্ত পরামর্শদাতা বিক্রম বসাক জানিয়েছেন, যন্ত্রের মাধ্যমে বর্জ্য প্লাস্টিকের প্রক্রিয়াকরণ করে টেবিল, চেয়ার-সহ বিভিন্ন প্লাস্টিকের সামগ্রী তৈরি হবে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

দেবাশিস দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:০৭
Share: Save:

পড়ুয়ারা স্কুলে প্লাস্টিক জমা দিলেই হাতে আসবে কফি বা শিঙাড়া। আর কোনও বাজার অথবা শপিং মলে প্লাস্টিক জমা দিলে মিলবে কাপড়ের সুন্দর ব্যাগ!

হাওড়া শহরকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে এ বার এমনই অভিনব পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। ‘ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’-এর (ইউএনডিপি) আর্থিক সহযোগিতায় ইতিমধ্যে হাওড়ার নর্থ-ওয়েস্ট বাইপাসের পাশে টিকিয়াপাড়ায় স্বচ্ছতা কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। সেখানে প্লাস্টিকের বর্জ্য থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে তৈরি করে নেওয়া হবে রাস্তা বা চেয়ার-টেবিল তৈরির উপাদান।

হাওড়ায় ইউএনডিপি-র দায়িত্বপ্রাপ্ত পরামর্শদাতা বিক্রম বসাক জানিয়েছেন, যন্ত্রের মাধ্যমে বর্জ্য প্লাস্টিকের প্রক্রিয়াকরণ করে টেবিল, চেয়ার-সহ বিভিন্ন প্লাস্টিকের সামগ্রী তৈরি হবে। সেই জিনিস বিক্রি করে পাওয়া অর্থ থেকেই এই কাজের জন্য নেওয়া কর্মীদের বেতন দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘ধাপে ধাপে আমরা

কাজটা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। প্রথমে বেলিলিয়াস লেনের একটা স্কুলে ওয়েস্ট কাফে চালু করা হবে। সেখানে পড়ুয়ারা প্লাস্টিক জমা দিলেই তার পরিমাণ হিসেব করে কফি বা শিঙাড়া পাবে। আবার কয়েকটি শপিং মল ও বাজারে কিয়স্ক বসানো হবে। সেখানে প্লাস্টিকের ব্যাগ জমা দিলে বদলে কাপড়ের সুন্দর ব্যাগ পাবেন ক্রেতারা।’’

পুরসভার নিকাশি দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, হাওড়ায় বেহাল নিকাশির জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী এই প্লাস্টিক। শহরের অধিকাংশ নিকাশি ব্যবস্থা প্লাস্টিক জমেই স্তব্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রতি বছর বর্ষায় জমা জলে সমস্যায় পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করতে পুরসভা একাধিক বার অভিযান চালালেও আজ পর্যন্ত তা বিশেষ সফল হয়নি। ফলে নিকাশি ব্যবস্থাও অবস্থাও একই রয়ে গিয়েছে।

হাওড়ার পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘রাস্তা থেকে আবর্জনা হটাতে ইতিমধ্যেই মডেল হিসেবে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু করেছি। এ জন্য ইউএনডিপি ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাসে এমন দু’টি স্বচ্ছতা কেন্দ্র বসাচ্ছে, যে যন্ত্রগুলির জন্য দু’টি শিফটে ১০ টন প্লাস্টিক জোগান দিতে হবে।’’ তিনি আরও

জানান, ওই ওয়ার্ড থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে ওই স্বচ্ছতা কেন্দ্রে জোগান দেবে পুরসভা। আর ইউএনডিপি থেকে দায়িত্ব পাওয়া একটি বেসরকারি সংস্থার সাফাইকর্মীরা বাকি আরও ১০টি ওয়ার্ডের বর্জ্য থেকে প্লাস্টিক আলাদা করে নিয়ে জোগান দেবে। এ ছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্লাস্টিক সংগ্রহ করতে আরও কিছু পদ্ধতি গ্রহণ করা হবে বলে স্থির করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার পরে হাওড়া শহরে প্লাস্টিকের বর্জ্য এবং প্লাস্টিকের দূষণ—দু’টোই কমবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পুর কমিশনার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Plastic Howrah Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE