Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Jagadhatri Puuja

কোভিড-শৃঙ্খলায় ভাসান চন্দননগরে

আলোকসজ্জাই শুধু নয়, ব্যান্ডপার্টিও ছিল না। ঢাকের বোলে দেবীকে বিদায় জানানো হয়েছে গঙ্গার ঘাটে। অধিকাংশই মাস্ক পরার বিধি পালন করেছেন।

চন্দননগরের রানিঘাটে নাইলনের জাল দিয়ে প্রতিমার খড়কুটো তুলে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: তাপস ঘোষ

চন্দননগরের রানিঘাটে নাইলনের জাল দিয়ে প্রতিমার খড়কুটো তুলে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: তাপস ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দননগর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৩৮
Share: Save:

কথা রাখল চন্দননগর। শোভাযাত্রাহীন এবং আলোকসজ্জাবর্জিত বিসর্জন দেখল আলোর শহর।

কোভিড পরিস্থিতির কথা ভেবেই এই ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়েছে। নিয়ম মেনে মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে চন্দননগর এবং ভদ্রেশ্বরের নির্দিষ্ট ঘাটে বিসর্জন শুরু হয়ে যায়। বারোয়ারিপিছু একটিমাত্র ট্রাক বরাদ্দ ছিল। তাতে প্রতিমা চাপিয়ে গঙ্গার ঘাটে পৌঁছেছে বিভিন্ন বারোয়ারি কমিটি। অন্যান্য বারের মতো ঝেঁটিয়ে লোক যাতে না আসে, সে ব্যাপারে তারা সতর্ক ছিল। সূর্যাস্তের আগেই অনেক প্রতিমার ভাসান হয়ে যায়। শোভাযাত্রা না থাকায় রাস্তায় বা ভাসানের ঘাটেও লোকসংখ্যা ছিল যথেষ্ট কম।

সূর্য ডোবার পরে ভাসানের জন্য ঘাটের পাশে রাস্তায় জগদ্ধাত্রী অপেক্ষা করেছেন পথবাতির আলোয়। আলোকসজ্জাই শুধু নয়, ব্যান্ডপার্টিও ছিল না। ঢাকের বোলে দেবীকে বিদায় জানানো হয়েছে গঙ্গার ঘাটে। অধিকাংশই মাস্ক পরার বিধি পালন করেছেন।

সুষ্ঠুভাবে বিসর্জন পর্ব সারতে পুলিশ-প্রশাসন সজাগ ছিল। চন্দননগরের রানিঘাট এবং শিববাটী ঘাটে অধিকাংশ প্রতিমা বিসর্জন হয়। এই দুই ঘাটে নজর ছিল বেশি। গোড়া থেকেই ডিসি (চন্দননগর) তথাগত বসু এবং এসিপি (১) পলাশ ঢালির নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী মোতায়েন ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রেডক্রস স্যোসাইটির শিবির ছিল। ঘাটে পর্যাপ্ত আলোর বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। ভাসানে বারোয়ারির সদস্যদের সাহায্যের জন্য ছিলেন পুরকর্মীরা।

বিসর্জনের ফলে গঙ্গাদূষণ রোধে গত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চন্দননগর পুরসভা। এ বার এই কাজে আরও কিছুটা এগোন গিয়েছে বলে পুরকর্তাদের দাবি। তাঁরা জানান, ভাসানের আগে প্রতিমার ফুলমালা-সহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য জিনিস নির্দিষ্ট ভ্যাটে রাখতে হয়। এ বারেও সেই ব্যবস্থা ছিল। এখানে ভাসানের পরেই পুজো কমিটিগুলি কাঠামো নিয়ে যায়। পুরকর্মীরা ঘাট সাফ করে দেন। কিন্তু প্রতিমার কাঠামোর খড়-সহ অনেক জিনিস গঙ্গায় ভেসে যায়। ফলে, দূষণ পুরোপুরি রোধ করা সম্ভব হয় না।

সেই কারণে ঘাটের যে অংশে বিসর্জন হয়, এ বার সেখানে নাইলনের এক ধরনের জাল লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিমা বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গে বারোয়ারির সদস্যরা কাঠামো তুলে ফেলেছেন। খড়-সহ নানা জিনিস ভেসে না গিয়ে জালে আটকে গিয়েছে। দ্রুত সেগুলি তুলে ফেলেছেন পুরকর্মীরা। সকাল থেকেই বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক এবং ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে ভাসানের তদারকি করেছেন পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডু। তিনি জানান, শহরের যে চারটি ঘাটে (রানিঘাট, শিববাটী ঘাট, কাঁসারিঘাট এবং ঢ্যাবঢেবি ঘাট) বিসর্জন হচ্ছে, সব জায়গাতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

স্বপনবাবু বলেন, ‘‘গঙ্গাদূষণ রোধে আমরা বদ্ধপরিকর। সেই জন্যই এই পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটি ফলপ্রসূ হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। ভাসানের পরেও বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে।’’ আজ, বুধবারেও বেশ কিছু প্রতিমা ভাসান দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jagadhatri Puuja Immersion Chandannagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE