চন্দননগরের পরে শ্রীরামপুর। ফের হুগলির একটি চটকলে কাজ বন্ধ হল।
মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া জুটমিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর বিজ্ঞপ্তি ঝোলান কর্তৃপক্ষ। এর ফলে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে এখানকার প্রায় চার হাজার শ্রমিক বিপাকে পড়লেন। কাঁচা পাটের অভাব, পর্যাপ্ত শ্রমিক না-থাকা, আর্থিক সঙ্কটকে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন মিল কর্তৃপক্ষ। কাঁচামালের অভাবের কারণ দেখিয়ে শনিবার রাতে চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিলেও কাজ বন্ধের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। দু’টি মিলের মালিক একই।
ইন্ডিয়া জুটমিল সূত্রের খবর, সেখানে ভিন্ রাজ্যের অনেক শ্রমিক কাজ করেন। বছরের এই সময়ে তাঁদের অনেকেই বাড়িতে যান। ফলে, কর্মীর অভাব দেখা দেয়। এ বারেও শ্রমিক সঙ্কট হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্প্রতি তিনটির বদলে দু’টি শিফটে কাজ চলছিল। ফলে, এমনিতেই উৎপাদন কম হচ্ছিল। কিন্তু পাটের জোগান না-থাকায় উৎপাদন চালানো আর সম্ভব হচ্ছে না বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। সেই কারণেই এ দিন দুপুরে দ্বিতীয় শিফট থেকে কাজ বন্ধের কথা ঘোষণা করা হয়।
স্বভাবতই মিল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে শ্রমিকেরা অখুশি। তাঁদের অভিযোগ, কৃত্রিম অভাব তৈরি করে মিল চালানো নিয়ে টালবাহানা করা হয়। সিটু নেতা সুমঙ্গল সিংহ বলেন, ‘‘অন্য মিলে পাট রয়েছে, আর এখানে নেই? চক্রান্ত করেই মিল বন্ধ করা হল। বুধবার বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন মিলে শ্রম দফতরে যাব। তার পরের দিন জিটি রোড অবরোধ করবে আমাদের সংগঠন।’’ আইএনটিটিইউসি নেতা অন্বয় চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘বিশেষ সময়ে কাঁচামালের অভাব হতেই পারে। কিন্তু আগে থেকে তা মজুত করলে তো সমস্যা হতো না। এত শ্রমিকের সমস্যার জন্য কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায় এড়াতে পারেন না।’’
মিল কর্তৃপক্ষ অবশ্য পরিস্থিতির জন্য শ্রমিকদেরই দায়ী করছেন। মিলের সিনিয়র পার্সোনেল ম্যানেজার সজল দত্তের দাবি, ‘‘এখন কাঁচামালের জোগান নেই। কিন্তু যখন ছিল, তখন শ্রমিকদের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। পর্যাপ্ত লোক না-পেয়ে উৎপাদন মার খেয়েছে। কম উৎপাদনের কারণে বরাত নিয়েও সময়ে পাঠানো যায়নি। প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। পাটের অভাবের পাশাপাশি আর্থিক সঙ্কটও রয়েছে। কয়েক মাস ধরে সমস্যা বেড়েছে।’’
শ্রম দফতরের কর্তারা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে চাইছেন। শ্রীরামপুরের উপ-শ্রম কমিশনার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী জানান, বুধবার মালিকপক্ষকে আলোচনায় ডাকা হয়েছে। এর পরে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করা হবে। আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি বুঝে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy