Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

পুজোর মুখে বন্ধ ইন্ডিয়া জুটমিল

এরপরই বৃহস্পতিবার উইভিং এবং স্যাকিং বিভাগের শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন। দু’পক্ষই নিজেদের বক্তব্যে অন়ড় থাকায় আলোচনা করেও রফাসূত্র মেলেনি। ফলে ওই দিন দু’টি বিভাগে কাজ হয়নি। তার পরেই মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০৮:৫০
Share: Save:

পুজোর মুখে বন্ধই হয়ে গেল শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া চটকল। শুক্রবার সকালে মিলের গেটে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝোলান কর্তৃপক্ষ। আর এর জেরে সমস্যায় পড়লেন কারখানার চার হাজারেরও বেশি শ্রমিক।

মিল সূত্রে খবর, নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম উৎপাদনের কারণ দেখিয়ে কয়েক দিন ধরে কর্তৃপক্ষ সব শ্রমিককে কাজ দিচ্ছিলেন না। এই নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধে। মালিকপক্ষ অবশ্য তাতে কান দেননি। শ্রমিকদের অভিযোগ, বুধবার মালিকপক্ষের তরফে ১৩ জন শ্রমিকের বিরুদ্ধে গোলমালে অভিযোগ তোলা হয়। তাঁদের কাজ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সূাইকে কাজ দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষ ওই দাবি মানেননি। উল্টে মিলের ভিতরে সমস্যা তৈরি করার অভিযোগে আরও কয়েক জনকে কাজ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এরপরই বৃহস্পতিবার উইভিং এবং স্যাকিং বিভাগের শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন। দু’পক্ষই নিজেদের বক্তব্যে অন়ড় থাকায় আলোচনা করেও রফাসূত্র মেলেনি। ফলে ওই দিন দু’টি বিভাগে কাজ হয়নি। তার পরেই মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। নোটিসে মালিকপক্ষের অভিযোগ, শ্রমিকদের একাংশের অসহযোগিতা এবং অনমনীয় মনোভাবের জেরে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তা ছাড়া, চটকলে বিভিন্ন বিভাগ পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত। তাই, দু’টি বিভাগে কাজ বন্ধ হলেও অন্যান্য বিভাগে তার প্রভাব পড়ছিল। বার বার কাজে যোগ দিতে বলা হলেও ওই দুই বিভাগের শ্রমিকরা তা করেননি। এই অবস্থায় মিল বন্ধ করা ছাড়া উপায় ছিল না।

শ্রমিক সংগঠনগুলি অবশ্য পরিস্থিতির জন্য মালিকপক্ষকে দুষছে। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক অন্বয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উৎসবের মুখে অচলাবস্থা তৈরির নজির আগেও আছে। এ বারেও সেটাই হল। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কাজ কম করার মিথ্যা অভিযোগ তুলে এই পরিস্থিতি করা হল।’’ সিটু প্রভাবিত বেঙ্গল চটকল মজদুর ইউনিয়নের নেতা সুমঙ্গল সিংহের বক্তব্য, ‘‘সামনে স্বাধীনতা দিবস এবং কুরবানি ইদে শ্রমিকদের সবেতন ছুটি পাওয়ার কথা। মালিকপক্ষ বিলক্ষণ জানেন, এই সময়টা মিল বন্ধ রাখতে পারলে অনেক টাকা বাঁচবে। তাই এই মতলব।’’

শ্রমিকদের অনেকে বলছেন, এর আগে গোলমালের অভিযোগে বসিয়ে দেওয়া দশ জন শ্রমিককে প্রতিশ্রুতি দিয়েও কাজে ফেরানো হয়নি। শ্রম দফতরে আবেদন-নিবেদন করেও ফল হয়নি। এক শ্রমিকের বক্তব্য, ‘‘কোথায় গেলে সুবিচার মিলবে, সেটাই বোঝা দায়।’’ শ্রীরামপুরের উপ শ্রম কমিশনার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী জানান, সমস্যা সমাধানের জন্য শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে কথা বলে শীঘ্রই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE