Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
TMC

কোপে বিরোধী দলনেতার আসন

খসড়া তালিকায় অসংরক্ষিত আসনগুলিতেই আছেন তৃণমূলের হেভিওয়েটরা— চেয়ারম্যান অভয় দাস, ভাইস-চেয়ারম্যান আব্বাস খান, চেয়ারম্যান পারিষদ আকবর শেখ, সুরজিৎ দাস এবং রিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, প্রাক্তন চেয়ারম্যান তৃণমূলের অর্জুন সরকারের ওয়ার্ডটি তফসিলিদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্য দলের হেলদোল নেই।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৩৮
Share: Save:

প্রাথমিক ভাবে তৃণমূলের ঘরে স্বস্তি। ক্ষুব্ধ বিরোধীরা।

শুক্রবার প্রকাশিত উলুবেড়িয়া পুরসভার খসড়া আসন বিন্যাসের তালিকায় দেখা যাচ্ছে, বেঁচে গিয়েছেন শাসকদলের হেভিওয়েটরা। কিন্তু বিরোধী দলনেতার ওয়ার্ডটি সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে।
এ বছরের মাঝামাঝি রাজ্যের বহু পুরসভার সঙ্গে ৩২ ওয়ার্ডের উলুবেড়িয়া পুরসভারও নির্বাচন হওয়ার কথা। খসড়া আসন বিন্যাসের তালিকায় দেখা যাচ্ছে, তফসিলি মহিলাদের জন্য দু’টি ওয়ার্ড (১০ এবং ৮) সংরক্ষিত করা হয়েছে। দু’টি ওয়ার্ড সংরক্ষিত (২০ ও ৩০) হয়েছে তফসিলি জাতির জন্য। তেরোটি ওয়ার্ড (২, ৫, ৯, ১৩, ১৬, ১৯, ২৩, ২৬ এবং ২৯) সংরক্ষিত হয়েছে সাধারণ মহিলাদের জন্য। বাকি ১৯টি ওয়ার্ড অসংরক্ষিত।

আসন বিন্যাসের চূড়ান্ত তালিকা আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে জানিয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত তালিকা নিয়ে অভিযোগ জানানো যাবে।’’

খসড়া তালিকায় অসংরক্ষিত আসনগুলিতেই আছেন তৃণমূলের হেভিওয়েটরা— চেয়ারম্যান অভয় দাস, ভাইস-চেয়ারম্যান আব্বাস খান, চেয়ারম্যান পারিষদ আকবর শেখ, সুরজিৎ দাস এবং রিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, প্রাক্তন চেয়ারম্যান তৃণমূলের অর্জুন সরকারের ওয়ার্ডটি তফসিলিদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্য দলের হেলদোল নেই। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘অর্জুনবাবু কোনও কাজ করতেন না, সেই কারণে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর আসন সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় কোনও বিরূপ ‌প্রভাব পড়বে না।’’ যদিও অর্জুনবাবুর দাবি, তিনি নিজে থেকেই পদত্যাগ করেন।
এই পুরবোর্ডে প্রথমে সিপিএমের ৬টি আসন ছিল। সেই কারণে সিপিএম বিরোধী দলের মর্যাদা পায়। কিন্তু কাউন্সিলরদের মধ্যে দু’জন পরে তৃণমূলে যোগ দেন। বাকি যাঁরা আছেন তাঁদের মধ্যে বিরোধী দলনেতা সাবিরুদ্দিন মোল্লা (২৩ নম্বর ওয়ার্ড) নিজেই খসড়া আসন বিন্যাসে সংরক্ষণের কোপে পড়েছেন। তাঁর ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডটিও সিপিএমের দখলে ছিল। ২০১৫ সালের নির্বাচনে সেটি ছিল সাধারণ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। কিন্তু এ বারে তফসিলি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে।

সাবিরুদ্দিনের অভিযোগ, ‘‘এই তালিকা তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে তৈরি। তাই শাসকদলের কারও গায়ে আঁচড় পড়েনি। এটা আমরা মানব না। এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানাব।’’ বিজেপির অভিযোগ, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে এই পুরসভার বহু ওয়ার্ডে তারা ভাল ফল করায় অশনিসঙ্কেত দেখছে তৃণমূল। তাই তৃণমূলের মাথারা যে সব ওয়ার্ডে জিতে আছেন সেই সব ওয়ার্ডগুলি অক্ষত রাখা হয়েছে। যাতে তাঁরা নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে জোরজবরদস্তি করে নির্বাচনে জিততে পারেন। সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের সভাপতি বেণুকুমার সেনের দাবি, ‘‘সরকার তার নিজের নিয়মে খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে কোনও রাজনৈতিক দলের হাত নেই। আসলে নির্বাচনে ৩২টি ওয়ার্ডেই হেরে যাবে বিরোধীরা। তাই আগাম কাঁদুনি গেয়ে রাখছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE