Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

জিতেও রিষড়ার ১৬টি ওয়ার্ডে পিছিয়ে কল্যাণ

৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের স্বামী সাকির আলির ওয়ার্ডেও কল্যাণবাবু এগিয়ে।

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রকাশ পাল
রিষড়া শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৯ ১১:০৩
Share: Save:

পাঁচ বছর আগের ব্যবধান ধরে রাখতে পারেননি। তবে, এ বারও ভাল ভাবেই ভোট-বৈতরণী পেরিয়েছেন। জয়ের হ্যাটট্রিকও হয়েছে। কিন্তু শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জয়েও বিঁধছে রিষড়া পুরসভার ফল। পরিসংখ্যান বলছে, পুরসভা এলাকায় পিছিয়ে আছেন কল্যাণ। আগামী বছরের পুরভোটের আগে যা চিন্তা বাড়াল তৃণমূল নেতৃত্বের।

রিষড়া পুরসভায় ওয়ার্ড ২৩টি। লোকসভা ভোটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এর মধ্যে ২, ৪, ৫, ৬, ১২, ১৬, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে। বাকি ১৬টিতেই পিছিয়ে। পিছিয়ে খোদ পুরপ্রধানের ওয়ার্ডেও। পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। এখানে কল্যাণবাবু ১২৩৭ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির দেবজিৎ পেয়েছেন ২৮৪৩ ভোট। অর্থাৎ ১৬০৬ ভোটে পিছিয়ে তৃণমূল। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার পুষ্পদেবীর মৃত্যুর পরে এই ওয়ার্ডটিও বিজয়বাবুই

দেখছেন। এখানেও বিজেপির থেকে পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শঙ্কর সাউয়ের ওয়ার্ডে তৃণমূল ১১০০ ভোটে পিছিয়ে পড়েছে। রাজ্যের শাসকদলের হাল সবচেয়ে খারাপ ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে চেয়ারম্যান ইন-কাউন্সিল চন্দ্রমণি সিংহের ওয়ার্ডে। বিজেপি এখানে ৫১৯০টি ভোট পেয়েছে। সেখানে তৃণমূলের ঝুলিতে সাকুল্যে ৮৫১টি ভোট। হারের ব্যবধান ৪৩৩৯। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় তিন হাজার ভোটে পিছিয়ে ক‌ল্যাণ।

তবে, উপ-পুরপ্রধান জাহিদ হাসান খানের ওয়ার্ডে কল্যাণবাবু ১৬৪০ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের স্বামী সাকির আলির ওয়ার্ডেও কল্যাণবাবু এগিয়ে। পুর-এলাকায় এখানেই তাঁর ‘লিড’ সর্বাধিক। কল্যাণবাবু পেয়েছেন ২৪৩৮ ভোট। বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৫৩৯টি। অর্থাৎ তৃণমূল ১৮৯৯ ভোটে এগিয়ে। তবে সব মিলিয়ে পুরসভায় প্রায় আট হাজার ভোটে পিছিয়ে তৃণমূল।

রিষড়ার ফল নিয়ে কল্যাণবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘অবাঙালি ভোট বিজেপিতে গিয়েছে। ওদের ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতিতে কিছু মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছেন।’’ তবে তৃণমূলেরই এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘শুধু অবাঙালি নয়, বাঙালিদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।’’ সাকির বলেন, ‘‘বহু বাঙালি এখন পুরসভার দিকে তাকান না।’’ পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্রের প্রতিক্রিয়া, ‘‘গত কয়েক বছরে যে ভাবে উন্নয়ন হয়েছে,

তার পরে এই ফল অপ্রত্যাশিত। আমাদের কিছু খামতি থাকলে পুরভোটের আগেই মেরামত করতে হবে।’’

পাশের পুরসভা শ্রীরামপুরে অবশ্য গত লোকসভা নির্বাচনের ঘাটতি মুছে এ বার বিজেপির থেকে এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। এখানে ২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯টিতে এগিয়ে বিজেপি। বাকি ২০টিতেই শাসকদল এগিয়ে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহ বলেন, ‘‘আগামী পুরভোটেও বিজেপির ধর্মীয় বিভাজনের চক্রান্ত আমরা রুখবই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE