আন্দোলন: কারখানার সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
লক্ষ্মীপুজো মিটতেই বন্ধ হয়ে গেল ফুলেশ্বরের কানোরিয়া জুটমিলের উৎপাদন। শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে শুক্রবার দুপুর থেকে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
শ্রমিকদের দাবি, তাঁদের ঢোকা এবং বেরোনোর দু’টি গেট আছে। তার মধ্যে একটি গেট বছরখানেক ধরে বন্ধ। সেই গেটটি খোলা এবং তাঁদের বকেয়া বোনাসের দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখান বলে চটকল সূত্রের খবর।
চটকলটি এমনিতে রুগ্ন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে ২০১১ সালের অগস্ট মাসে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে ফের চটকলটি খুলে যায়। তবে তিনটির বদলে একটি মাত্র শিফট চলে এখানে। চটকলটি খোলার সময়ে যেখানে শ্রমিকের সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় হাজার, বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬০০-তে। যে সব শ্রমিক অবসর নিয়েছেন, তাঁদের জায়গায় নতুন কাউকে আর নিয়োগ না করার ফলেই শ্রমিক সংখ্যা কমে গিয়েছে বলে চটকল সূত্রের খবর।
তবে ২০১১ সালে খোলার পরে আর বন্ধ না হলেও সঙ্কট দেখা যায় নোটবন্দির সময়ে। এর জেরে ২০১৭ সালের গোড়ায় কয়েক মাস বন্ধ থাকে চটকলটি। ওই বছরের অগস্ট মাসে ফের চটকলটি খুলে যায়।
চটকলে ঢোকার দু’টি গেট আছে। একটি ছোট এবং একটি বড়। নোটবন্দির পরে কারখানা খোলার সময়ে কর্তৃপক্ষ বড় গেটটি বন্ধ করে শুধু ছোট গেটটি খুলে দেন। শ্রমিকদের মধ্যে ওই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ দেখা দেয়। তাঁদের বক্তব্য, ছোট গেট দিয়ে সাইকেল নিয়ে ঢুকতে খুব অসুবিধা হয়। তাঁদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষকে বার বার বলা সত্ত্বেও বড় গেটটি খোলা হয়নি। এর মধ্যে আবার তাঁদের কয়েকজনকে পুজোয় প্রাপ্য বোনাস দেওয়া হয়নি বলে শ্রমিকদের অভিযোগ।
এই দু’টি বিষয়কে সামনে রেখে শুক্রবার দুপুর থেকে চটকলের কাজ বন্ধ করে দেন শ্রমিকেরা। শনিবার সকাল থেকে তাঁরা চটকলের সামনে বসে পড়েন। এর ফলে উলুবেড়িয়া -বাউড়িয়া রোড কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ধর্মঘটের নেতৃত্বে ছিল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি। সংগঠনের কারখানা ইউনিটের সভাপতি মেহবুব লস্কর বলেন, ‘‘শ্রমিকদের দাবি ন্যায্য। বড় গেট খোলা এবং যে সব শ্রমিককে প্রাপ্য বোনাসের থেকেও কম দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বকেয়া টাকা মিটিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ চলবে।’’
চটকল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, মাত্র দু’জন শ্রমিককে কম বোনাস দেওয়া হয়েছে, কারণ তাঁদের হাজিরা ছিল খুব কম। বড় গেটটি খোলার ব্যপারে কর্তৃপক্ষ জানান, শ্রমিকদের একাংশ চটকলের যন্ত্রাংশ চুরি করে ব্যাগের ভিতরে ঢুকিয়ে বড় গেট দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। নিরাপত্তারক্ষী কম থাকায় সবাইকে তল্লাশি করা সম্ভব হচ্ছিল না। সেই কারণেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় শ্রমিকেরা প্রথমে কাজে যোগ দিলে বড় গেটটি খোলার ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেহবুব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy