Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
konnagar

নিকাশি বেহাল, প্লাস্টিকে মুখ ঢেকেছে কোন্নগর

পুরভোটের ঠিক মুখেই প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে ডাঁহা ফেল কোন্নগর পুরসভা।

বদ্ধ: নালা ঢেকে থাকে প্লাস্টিকে। নিজস্ব চিত্র

বদ্ধ: নালা ঢেকে থাকে প্লাস্টিকে। নিজস্ব চিত্র

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
কোন্নগর শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৪৩
Share: Save:

ঠিকাদারের গ্রাস থেকে অবন ঠাকুরের বাড়ি উদ্ধারের জন্য প্রশংসা পেয়েছিল পুর কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি পুর এলাকায় যখন খেলার মাঠ কমে যাচ্ছে, তখন একটা হলেও বড় খেলার মাঠ তৈরির কাজও কিছুটা তারিফ পেয়েছিল এলাকার মানুষের। হাল আমলে উত্তরপাড়ার পর কোন্নগর পুর এলাকা স্মার্ট সিটির তকমাও পেয়েছে।

কিন্তু পুরভোটের ঠিক মুখেই প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে ডাঁহা ফেল কোন্নগর পুরসভা। তার ফলেই বেহাল শহরের নিকাশি ব্যবস্থা। আর তাতেই ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। এই ক্ষোভ ভোটবাক্সে গিয়ে তাঁদের ভরাডুবির হাত থেকে বাঁচাতে পারবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় শাসকদলের নেতারাই।

কোন্নগর পুর এলাকায় পুর কর্তৃপক্ষ প্লাস্টিকে লাগাম পরাতে বিচ্ছিন্নভাবে উদ্যোগী হলেও বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলন নেই। যার জেরে এলাকার পুরো নিকাশি ব্যবস্থাকেই বানচাল করে দিচ্ছে প্লাস্টিক। কিছু সচেতন মানুষ চাইলেও প্লাস্টিকের বিকল্প কিছু পাচ্ছেন না ব্যাগ হিসেবে ব্যবহার করার। তাই সরকারি স্তরে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। হয়েছে অনেক বৈঠকও। কিন্তু প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পাট বা কাপড়ের ব্যাগের কোনও ধারাবাহিক জোগানের বন্দোবস্ত এ পর্যন্ত সরকারি স্তরে কিছুই হয়নি।

এই সমালোচনা শুধু কোন্নগরে বিরোধীরা নন, শাসকদলের পুরপিতারাও করছেন। সমালোচনা করছেন পুর কর্তৃপক্ষের নীতি নির্ধারণে পঙ্গুতার প্রশ্নেও। কোন্নগর পুরএলাকার বহু জায়গায় অল্প বৃষ্টিতে জল জমে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের এ কে ব্যানার্জি লেন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সূর্যসেন স্ট্রিট, শহিদ রঞ্জন সেন সরণি, বাঞ্ছা মিত্র লেন। তার উপর কোন্নগর রবীন্দ্রভবনের সামনে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ক্রাইপার রোড। সেখানেও জমা জলের সমস্যা রয়েছে। কোন্নগরের কলোনি এলাকা ১৮, ১৯, ২০ সর্বত্রই বর্ষাকালে জলে বেহাল চিত্র।

সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি হয় একটু বেশি বৃষ্টি হলেই স্টেশনের সাবওয়ের। অথচ সেখানে টাকা নেওয়া হয় গাড়ি যাতায়াতে। একটু বৃষ্টিতেই এমন অবস্থা হয় সাবওয়ের দু’পারের মানুষ পার হতে পারেন না। অগত্যা বাধ্য হয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিতে মানুষকে রেল লাইন পারাপার করতে হয়। কোন্নগর নবগ্রামের দিকে প্রচুর স্কুল রয়েছে। রেল লাইন পার হতে ছাত্রছাত্রীর নাকান হন।

সমালোচনায় মুখর শাসকদলের বর্ষীয়ান কাউন্সিলর স্বপন দাসও। স্বপনবাবু এক সময় কোন্নগর পুরসভার পুরপ্রধানের দায়িত্বও সামলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভা পরিচালনা কিন্তু একটা সমবেত কাজ। সব দলের মতকেই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু আমাদের পুরবোর্ডের ক্ষেত্রে যেটা হয় না। মতামত নেওয়া দূরে থাক, পুরসভার বোর্ড মিটিং এ কথা বলতেই পারেন না অধিকাংশ পুর সদস্য। কোন্নগরে এত জায়গায় জল জমে, পাম্পের ব্যবস্থা আছে?’’

সিপিএম কাউন্সিলর তরুণ গায়েনের অভিযোগ, ‘‘মানুষকে সচেতন করার জন্য ধারাবাহিকভাবে পরিকল্পনা নিতে হবে। লোক দেখানো বিচ্ছিন্ন কোনও পুর প্রকল্প নন। একদিকে সচেতন করতে হবে। অন্যদিকে প্লাস্টিকের বিকল্প কাগজ বা কাপড় অথবা পাটের ব্যাগের আউটলেট তৈরি করতে হবে।’’

পুরপ্রধান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিকাশি নিয়ে পুর এলাকায় কিছু সমস্যা আছে। আমরা কিন্তু নিয়মিত ধরপাকড় করি প্লাস্টিক। আমরা এ দিক থেকে আটকাচ্ছি, কোন্নগর নবগ্রাম থেকে ঢুকছে। মানুষকে সচেতন তবে হবে। সবটা পুরসভা বা সরকার করে দেবে এই মনোভাব ঠিক নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipal Election Municipality Konnagar Plastic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE