বিক্ষোভ: আক্রান্ত যুবতী । নিজস্ব চিত্র।
কাজ সেরে ফেরার পথে রবিবার রাতে বাড়ির কাছেই দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন পোলবার এক যুবতী। দুষ্কৃতীরা তাঁর কানের দুল, মোবাইল, হাতব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে শাবল দিয়ে মাথা ফাটিয়ে আলু খেতে ফেলে রেখে যায়। তাঁর মাথায় ছ’টি সেলাই পড়েছে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত তাঁর জ্ঞান ফেরেনি। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সোমবার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করলেন গ্রামবাসী। ওসি-কে ঘিরেও বিক্ষোভ হয়।
পোলবার নেকশার ঘোষপুরের টিনা কোলে নামে বছর চব্বিশের ওই যুবতীকে প্রথমে পোলবা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। তাঁর বাবা শম্ভুচরণবাবুর ক্ষোভ, ‘‘রবিবার রাতেই পুরো ঘটনাটি পোলবা থানায় জানাই। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। অভিযোগও নেয়নি।’’ অভিযোগ মানেননি হুগলি (গ্রামীণ) জেলার পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন। তাঁর দাবি, ‘‘ওই রাতে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। সোমবার হয়েছে। তার ভিত্তিতে তদন্তও শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শম্ভুচরণবাবু পেশায় চাষি। তাঁর একমাত্র মেয়ে টিনা মহানাদ এলাকায় একটি বেসরকারি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে চাকরি করেন। প্রতিদিন সকাল ৯টায় কাজে যান। সন্ধে ৭টা নাগাদ ফেরেন। রবিবারও সাইকেলে ফেরার সময় বাড়ির কাছে আলুখেতের ভিতরের রাস্তা ধরেন। তখনই আক্রান্ত হন। তার কিছুক্ষণ পরেই এক গ্রামবাসী ওই রাস্তা ধরে মোটরবাইকে ফেরার সময়ে যুবতীকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে গ্রামে গিয়ে খবর দেন। গ্রামবাসীরা এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। টিনার পরিবারের লোকজন এসে দেখেন, মেয়ের সোনার দুল, মোবাইল, হাতব্যাগ গায়েব। পাশে পড়ে রয়েছে সাইকেল। সোমবার ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি রক্তমাখা শাবল উদ্ধার করে। তদন্তকারীদের ধারণা, শাবল দিয়ে যুবতীকে আঘাত করা হয়।
কিন্তু ওই রাতেই পুলিশ কেন দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি, এই প্রশ্ন তুলে সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ গ্রামবাসীরা নেকশা-ঘোষপুর রোড অবরোধ শুরু করেন। পোলবা থানার ওসি সমীর সরকার অবরোধ তুলতে গেলে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। ঘটনাস্থলে ওসিকে যেতে হবে এবং সঠিক তদন্ত করে দুস্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে বলে দাবি তোলেন গ্রামবাসীরা। ওসি ঘটনাস্থলে যান। যথাযথ তদন্তেরও আশ্বাস দেন।
টিনার মা রিনাদেবী বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা হঠাৎ কেন মেয়ের উপরে চড়াও হল বুঝতে পারছি না। ও গত মাসের মাইনে নিয়ে ফিরবে বলেছিল। সব গেল। ও কথা বলতে পারছে না। জ্ঞান ফিরলে জানতে পারব কী হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy