Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ক্যাফেটেরিয়া, আলোয় সাজতে চলেছে লালদিঘি

লালদিঘির মতো বড় জলের পরিসর চন্দননগরের বুকে আর দ্বিতীয় নেই। কিন্তু বহুদিন ধরেই সেই লালদিঘি পড়ে রয়েছে অযত্নে। শহরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি,ওই দিঘির উপযুক্ত সংস্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণের। সেই দিঘিই এ বার সংস্কার করে সৌন্দর্যায়ন হতে যাচ্ছে। চন্দননগর পুরসভা এবং রাজ্য হেরিটেজ কমিশন যৌথ ভাবে সেই কাজ করতে চলেছে।

লালদিঘি।

লালদিঘি।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০৫:০৯
Share: Save:

দীর্ঘদিন ধরেই স্ট্র্যান্ড এ শহরে সময় কাটানোর সেরা ঠিকানা। তার খ্যাতিও রয়েছে দেশ-বিদেশে। এ বার সময় কাটানোর আর এক ঠিকানা পেতে চলেছে চন্দননগর। আলো, ক্যাফেটেরিয়া, বসার জায়গায় নতুন ভাবে সাজতে চলেছে ফরাসি আমলের লালদিঘি।

লালদিঘির মতো বড় জলের পরিসর চন্দননগরের বুকে আর দ্বিতীয় নেই। কিন্তু বহুদিন ধরেই সেই লালদিঘি পড়ে রয়েছে অযত্নে। শহরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি,ওই দিঘির উপযুক্ত সংস্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণের। সেই দিঘিই এ বার সংস্কার করে সৌন্দর্যায়ন হতে যাচ্ছে। চন্দননগর পুরসভা এবং রাজ্য হেরিটেজ কমিশন যৌথ ভাবে সেই কাজ করতে চলেছে।

চন্দননগরের পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু জানান, আপাতত ১ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে লালদিঘি সংস্কারের জন্য। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। আগামী বছরের মাঝামাঝি কাজ শেষের সময়সীমা ধার্য হয়েছে।

কথিত আছে, লালদিঘির কাছেই ফরাসি আমলে একটি বড় দুর্গ ছিল। সেই দুর্গ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাটির জোগান দিতেই লালদিঘি খোঁড়া হয়েছিল। এক সময় গঙ্গার সঙ্গেও যোগ ছিল ওই জলাশয়ের। গঙ্গায় জোয়ার-ভাটার সঙ্গে লালদিঘির জলও ওঠানামা করত। কিন্তু পরে গঙ্গার সঙ্গে লালদিঘির সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সরকারি খাতায় সেই আমলে দিঘির আয়তন ছিল অন্তত ২০ বিঘা। কিন্তু পরে দিঘির অনেকটা বুজে যায়। পাশে তৈরি হয়েছে রাস্তা। বর্তমানে দিঘির আয়তন দশ বিঘার কিছু বেশি বলে পুরসভা সূত্রের খবর। জিটি রোড লাগোয়া ওই দিঘিই এ বার সংস্কার করা হবে।

কী হতে চলেছে?

পুরসভা সূত্রের খবর, মানুষ যাতে দু’দণ্ড লালদিঘির পাড়ে এসে কাটাতে পারেন, সে জন্য বিনোদনের নানা আয়োজন থাকবে। থাকবে বসার ব্যবস্থা। গাছ লাগানো হবে চারদিকে। আলো দিয়ে সাজানো হবে দিঘির পাড়। যাতে সন্ধের পরে মানুষ স্বচ্ছন্দে যেতে পারেন। দিঘির উপর তৈরি হবে ‘ডেক’। সেই ‘ডেক’ ধরে জলের উপর অনেকটা দূর পর্যন্ত চলে যাওয়া যাবে। সেখানেই থাকবে ক্যাফেটেরিয়া। দিঘির জল যাতে পরিষ্কার থাকে, সে জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করা হবে।

অনেকেই মনে করছেন, শহরের বুকে ফাঁকা জায়গা দিন দিন কমছে। ওই এলাকা সাজিয়ে তোলা হলে অনেকেই ভিড় জমাবেন। বিশেষ করে যাঁরা ভিড়ের জন্য স্ট্র্যান্ডে যেতে চান না। তা ছাড়া, দিঘির অন্য উপযোগিতাও রয়েছে। শহরে বহু আবাসন গড়া হলেও তার মধ্যে অনেকগুলিতে ন্যূনতম অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। লালদিঘির জল বিপদে কাজে আসতে পারে।

বর্তমানে দিঘির পাড়ে বেশ কিছু মানুষের দীর্ঘদিনের বসতি রয়েছে। যাঁদের অনেকেই পুরসভার সাফাই দফতরের কর্মী। এক সময় দিঘির পাড়ের ওই বাসিন্দাদের সরকারি উদ্যোগে বিকল্প থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা উঠেছিল। লালদিঘিতে সৌন্দর্যায়ন হলে ওই বাসিন্দাদের কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। তবে পুর কর্তৃপক্ষ তাঁদের বাসস্থানের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE