তাঁদের ন্যায্য পাওনা আংশিক ছাড়তে রাজি হয়েছিলেন শ্রমিকেরা। চটকল কর্তৃপক্ষকে সেই বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল লোক আদালত। কিন্তু সেই সমঝোতার শর্ত মানেননি কাজোরিয়া গোষ্ঠী পরিচালিত চন্দননগরের গোন্দলপাড়া চটকল কর্তৃপক্ষ। শনিবার চন্দননগর মহকুমা আদালতে এ নিয়ে বসা লোক আদালতেই সেই ছবিটা ফুটে উঠেছে। ফলে, শ্রমিকদের বকেয়া মেটাতে ‘ন্যাশনাল ট্রাইবুন্যাল’ নির্দেশিত লোক আদালতের উদ্দেশ্য কিছুটা ধাক্কা খেল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এই বিষয়ে অবশ্য ওই শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধার সঞ্জয় কাজোরিয়া বলেন, “মিলের যাঁরা দায়িত্বে রয়েছেন বিষয়গুলি তাঁরাই মেটান। আমি ওইসব জানি না, জানতে চাইও না। ” কিন্তু তাঁর অনুমতি ছাড়া চটকল কর্তারা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কিনা, সেই প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন।
লোক আদালতের চেয়ারম্যান আর্তি শর্মা রায়ের নেতৃত্বে এ দিন ওই চটকলের শ্রমিকদের বকেয়া সংক্রান্ত মোট ১৯টি মামলার শুনানি হয়। সিবিআই আদালতের বিচারক শুভেন্দু ভট্টাচার্য ছাড়াও বিচারক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় এবং গঙ্গাধর নন্দী ওই চটকলের মোট ১৭টি বকেয়া মামলার খুঁটিনাটি শোনেন। বছরের পর বছর ধরে পড়ে থাকা শ্রমিকদের এই বকেয়া মামলা মেটাতে একটি আবেদনের ভিত্তিতে ‘ন্যাশনাল ট্রাইবুন্যাল’ নড়েচড়ে বসে। লোক আদালতে সমঝোতার ভিত্তিতে পড়ে থাকা মামলার মীমাংসার অনুমতি দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী এ দিন চন্দননগর আদালতে শ্লোক আদালত বসেছিল। সব পক্ষের শুনানির পর বিচারকেরা শ্রমিকের বকেয়া সুদ ছাড়াও ১০ শতাংশ আসল টাকা ছাড়ে সম্মতি দেন। যদিও গোন্দলপাড়া চটকল কর্তৃপক্ষের তরফে ৩০ শতাংশ আসল টাকা ছাড়ের দাবি জানানো হয়। শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার সাপেক্ষে তাঁদের আইনজীবী বিশ্বজিত্ মুখোপাধ্যায় আদালতকে জানান।
বিশ্বজিত্বাবু বলেন, “অনেক ঘাম-রক্তের বিনিময়ে শ্রমিককে উপার্জন করতে হয়। কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষ সময়মতো টাকা দিলেন না। তার উপর শ্রমিকেরা দশ শতাংশ ছাড় দেওয়ার পরও মিল কর্তৃপক্ষ তা মানতে অস্বীকার করলেন। লোক আদালতের নির্দেশ মেনে আমরা মিল কর্তৃপক্ষের শুভ বুদ্ধি উদয়ের অপেক্ষায় থাকব। না হলে উচ্চ আদালতে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনও পথ আমাদের খোলা থাকবে না।”
রাজ্য শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত বলেন,“মিল কর্তৃপক্ষের অনৈতিক কোনও দাবি শ্রমিকেরা মানতে পারেন না। শ্রমিকদের বকেয়া আদায়ে তাঁদের পাশে রাজ্য সরকার সব সময় সহযোগিতা নিয়ে হাজির থাকবে। লোক আদালতের নির্দেশে মিল কর্তৃপক্ষের অন্তত মান্যতা দেওয়া উচিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy