—প্রতীকী ছবি।
পরপর দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ নির্যাতনের শিকার হলেন এক বধূ। অভিযোগ, শুধু বেধড়ক মারধরই নয়, শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করা হয় তাঁকে। পাশাপাশি, ওই বধূর পরিজনেদের কাছে পণ হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকাও দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে স্বামী-সহ ন’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গুরুতর আহত অবস্থায় হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি রৌনক জাহান নামে নির্যাতিতা ওই তরুণী।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৪ সালের এপ্রিলে হাওড়ার টিকিয়াপাড়ার বাসিন্দা রৌনকের সঙ্গে বিয়ে হয় বর্ধমানের মশাগ্রামের বাসিন্দা ইমতিয়াজ আহমেদের। ইমতিয়াজদের হাওড়ার জয়বিবি রোডেও একটি এক কামরার বাড়িও রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে রৌনকের উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। রৌনকের মা আসমা খাতুনের অভিযোগ, অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল তাঁদের দ্বিতীয় কন্যার জন্মের পর থেকে। তিনি জানান, তাঁর মেয়ের চার বছরের এবং দুই বছরের দু’টি মেয়ে আছে। আসমা বলেন, ‘‘রৌনকের প্রথম মেয়ে হওয়ার পরেই ইমতিয়াজ আমাদের থেকে দু’লক্ষ টাকা নেয়। বলে ওই টাকায় দুবাই যাবে। আবার মেয়ে হলে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। আমার স্বামী মারা গিয়েছেন। আমি একা মানুষ। কোথায় এত টাকা পাব? তাই টাকা দিতে পারিনি। এ জন্যই ওরা সবাই মিলে মেয়ের উপরে অত্যাচার করেছে। ওকে মেরে ফেলার চেষ্টাও করেছে।’’
পুলিশ জানায়, ইমতিয়াজ দুবাইয়ে শ্রমিকের কাজ করেন। দিন কুড়ি আগে বর্ধমানের বাড়িতে ফিরেছিলেন। তখনই রৌনকের কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। রৌনকের পরিজনেদের অভিযোগ, গত ৬ নভেম্বর রাতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা তাঁকে প্রচন্ড মারধর করেন। রৌনককে ঘুসি, লাথি, চড় মারা হয়। এমনকি, শ্বাসরোধ করে হত্যারও চেষ্টা হয়। রৌনকের শ্বশুরবাড়ির পড়শিদের থেকে অত্যাচারের খবর পেয়ে মশাগ্রামে যান পরিজনেরা। ওই তরুণীর বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, রৌনক অচৈতন্য অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন। স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ফেরার। এর পরেই ওই গৃহবধূর পরিজনেরা সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে এসে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সোমবার হাওড়া থানায় রৌনকের মা এই ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্তে নামে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy