Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মাঝরাতে বাড়ি ঢুকে বৃদ্ধকে খুন

অভিযোগ, রাত তিনটে নাগাদ দুই দুষ্কৃতী গ্রিল কেটে ভিতরে ঢুকে দোতলায় উঠে সুজিতবাবুর দাদা শুভ্রজিৎবাবুর ঘরের দরজা খুলে ফেলে। তারপর শুভজিৎবাবুর গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ।

জখম: হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জখম ঝর্নাদেবী।নিজস্ব চিত্র

জখম: হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জখম ঝর্নাদেবী।নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুপ্তিপাড়া শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ০৩:১৪
Share: Save:

গ্রিল কেটে বাড়িতে ঢুকে ভোজালি দিয়ে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে খুন করে পালাল দুষ্কৃতীরা। গুরুতর জখম হয়েছেন বৃদ্ধের স্ত্রী। শনিবার গভীর রাতে গুপ্তিপাড়ার আয়দার এই ঘটনায় নিহতের নাম সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় (৬৭)। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, চুরিতে বাধা দিতে গিয়েই ওই ঘটনা। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, চুরি-ডাকাতি নয়। ঘটনার পিছনে সম্পত্তি নিয়ে শরিকি বিবাদ থাকতে পারে।

হুগলির পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘নিহতের পরিবারের তরফে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনই খুনের কারণ নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে কিছু সূত্র মিলেছে। সব দিক খোলা রেখেই তদন্ত করা হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের দোতলা বাড়ি আয়দার একটু নিরালা এলাকায়। বাড়ির সদস্যরা জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ সকলে খেয়ে শুয়ে পড়েছিলেন। অভিযোগ, রাত তিনটে নাগাদ দুই দুষ্কৃতী গ্রিল কেটে ভিতরে ঢুকে দোতলায় উঠে সুজিতবাবুর দাদা শুভ্রজিৎবাবুর ঘরের দরজা খুলে ফেলে। তারপর শুভজিৎবাবুর গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ।

নিহত সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায়।নিজস্ব চিত্র

ইতিমধ্যে চেঁচামেচি শুনে সুরজিৎবাবু এবং তাঁর স্ত্রী ঝর্নাদেবী পাশের ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। দুষ্কৃতীদের বাধা দিতে গেলে শুভজিৎবাবুকে ছেড়ে দুষ্কৃতীরা তাঁদের ভোজালির কোপ মেরে পালায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান সুজিতবাবু। ঝর্নাদেবীর বাঁ হাতে কোপ পড়ে। তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। খবর পেয়ে বলাগড় থানার পুলিশ তদন্তে আসে।

রবিবার হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ঝর্নাদেবী বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা লুঠ করতে এসেছিল। আমরা বাধা দেওয়ায় কিছু করতে পারেনি। ভাসুরকে মারতে বাধা দেওয়ায় স্বামীকে আর আমাকে ভোজালি দিয়ে কোপায়।’’ ঝর্নাদেবী জানান, রুমালে মুখ ঢাকা ওই দুষ্কৃতীরা হাফ প্যান্ট পরেছিল। মুখ রুমালে ঢাকা ছিল। ঝর্নাদেবীর মেয়ে সংহিতার কথায়, ‘‘মনে হয়, দুষ্কৃতীরা তিনজেনর বেশি ছিল। দু’জন ভিতরে ঢোকে। বাকিরা বাইরে ছিল।’’ রবিবার শুভজিৎবাবুর ছেলে বিদার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় বলাগড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে অবশ্য কোনও কারণ বা অনুমানের কথা লেখা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

পুলিশের বক্তব্য, ঘরের কোনও জিনিসে দুষ্কৃতীরা হাত দেয়নি। তা ছাড়া, মারধরের আগে দুষ্কৃতীরা আলমারির চাবি বা অন্য জিনিসপত্রই বা চাইল না কেন? তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা হামলার উদ্দেশ্যেই এসেছিল বলে মনে হচ্ছে। ওই পরিবারের সম্পত্তি নিয়ে শরিকি সমস্যা রয়েছে। এই ঘটনার পিছনে কী কারণ, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE