প্রতীকী ছবি।
ছুটির সকালে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে দু’টি গুলির শব্দ! শুনেই চমকে উঠেছিলেন এলাকার লোকজন। রাস্তায় এসে তাঁরা দেখেন, থরথর করে কাঁপছে পাঁচ বছরের একটি শিশু। পাশে দাঁড়িয়ে আর এক যুবক। রাস্তায় পড়ে আছে একটি মোটরবাইক।
জানা গেল, বাজার থেকে ফেরার পথে ওই বাচ্চাটির বাবাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে দুই দুষ্কৃতী। রক্তাক্ত অবস্থায় পাঁচিল টপকে এক বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন ওই ব্যক্তি। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বাকসাড়ায়। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বরুণ সাহা ওরফে বুচা নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকারই বাসিন্দা, পেশায় জমি-বাড়ি কেনাবেচার ব্যবসায়ী পরিতোষ দে ওরফে নিমাইয়ের মাথার ডান দিক ঘেঁষে বেরিয়ে যায় গুলিটি। তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিমাইয়ের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। ওই ব্যক্তি এলাকার সক্রিয় তৃণমূলকর্মী বলেও পরিচিত।
এ দিন নিমাই জানান, বাকসাড়া বাজার থেকে তিনি মোটরবাইকে চেপে এলাকারই একটি বাই লেন ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। বাইক চালাচ্ছিলেন তাঁর পরিচিত এক যুবক। দু’জনের মাঝে বসে ছিল নিমাইয়ের পাঁচ বছরের ছেলে। ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘রাস্তার একেবারে শেষ প্রান্তে একটি গাড়ি আচমকাই আমাদের বাইকের গা ঘেঁষে চলে আসে। তাতে বাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায়। মনে হচ্ছিল চালক গাড়ি চালানো শিখছেন। ওই বিষয়টি নিয়েই একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল।’’
নিমাইয়ের অভিযোগ, সে সময়ে আচমকাই পিছন থেকে বাইকে চেপে দুই দুষ্কৃতী আসে। মুখ ছিল ফুল মাস্ক হেলমেটে ঢাকা। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা নিমাইকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিটি ওই ব্যবসায়ীর মাথার ডান দিক ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় নিমাই মাটিতে পড়ে গেলেও পরক্ষণেই তিনি উঠে দাঁড়াতে ফের দ্বিতীয় গুলি ছোড়া হয়। সেটা অবশ্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এর পরেই নিমাই ওই দুই দুষ্কৃতীকে ধাক্কা মেরে একটি পাঁচিল টপকে পালিয়ে যান। গুলির আওয়াজে লোকজনকে ছুটে আসতে দেখে চম্পট দেয় দুই দুষ্কৃতীও। তার আগেই চলে গিয়েছিল গাড়িটিও।
খবর পেয়ে আসে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, বহু বছর আগে নিমাইয়ের নামে একাধিক অসামাজিক কাজের অভিযোগ ছিল। কিন্তু শেষ কয়েক বছর তিনি সেই সব ছেড়ে সামাজিক কাজ ও নিজের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। বাকসাড়ার তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওঁর পুরনো বিষয় নিয়ে কিছু বলতে পারব না। সেটা পুলিশ দেখবে। তবে নিমাই দলের সক্রিয় কর্মী। যাঁরা আমাদের বিরোধিতা করছেন, তাঁরাই এলাকা দখল করতে ওই কর্মীর উপরে আক্রমণ করেছেন।’’ যদিও প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, বিষয়টির সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। পুরনো শত্রুতা থেকেই ঘটনাটি ঘটেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy