Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বিমার টাকা মেটাতে নির্দেশ দিল ক্রেতা সুরক্ষা আদালত

বেসরকারি সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সুপ্রদীপবাবু জানান, তিনি ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে সল্টলেক সিটি সেন্টার থেকে ৫৪ হাজার ৫৮৫ টাকা দিয়ে একটি বিদেশি সংস্থার ফোন কেনেন। বিমা বাবদ ১৬৬৫ টাকা জমা দেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রকাশ পাল
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০৭
Share: Save:

মোবাইল কিনে সেটির বিমা করেছিলেন এক যুবক। কিছু দিন পরে ফোনটি চুরি যায়। কিন্তু বিমা সংস্থা চুক্তি মেনে ফোনের টাকা দেয়নি বলে অভিযোগ। শেষে হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থাকে ওই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল। ক্রেতার মানসিক যন্ত্রণা এহং হয়রানির জন্যেও আদালত তাদের জরিমানার আদেশ দিয়েছে। রায় জেনে সুপ্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে রিষড়া ফাঁড়ি এলাকার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি খুশি। তিনি বলেন, ‘‘বিমার জন্য আমাকে পরিষেবা কর দিতে হয়েছে। অথচ পরিষেবা দেওয়া হয়নি। আদালতের পর্যবেক্ষণ সঠিক।’’

বেসরকারি সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সুপ্রদীপবাবু জানান, তিনি ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে সল্টলেক সিটি সেন্টার থেকে ৫৪ হাজার ৫৮৫ টাকা দিয়ে একটি বিদেশি সংস্থার ফোন কেনেন। বিমা বাবদ ১৬৬৫ টাকা জমা দেন। ২০১৫ সালে কলকাতার আরএন মুখার্জি রোডের কোনও জায়গায় বাসে চেপে যাওয়ার সময় কেউ তাঁর পকেট থেকে ফোনটি চুরি করে নেয়। ওই দিনই তিনি মোবাইল সংস্থায় ফোন করে পরিষেবা বন্ধ করে দেন। হেয়ার স্ট্রিট থানায় ডায়েরি করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এর পরে গোটা বিষয়টি জানিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট সংস্থায় বিমার টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। তাদের কথামতো নথি জমা দেন।

কিন্তু টাকা মেলেনি। ওই সংস্থা এবং যে দোকান থেকে মোবাইল ফোনটি কেনা হয়েছিল, সেখানে দরবার করেও লাভ হয়নি।

সাড়া না মেলায় ২০১৬ সালের মে মাসে ওই দোকান এবং বিমা সংস্থার দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন সুপ্রদীপবাবু। তাঁর আইনজীবী সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে এবং নথিপত্র খুঁটিয়ে দেখে আদালত মনে করে, ওই টাকা মিটিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। এটা না করায় আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি উপভোক্তাকে হয়রান হতে হয়েছে। মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে। দোকানের কর্তৃপক্ষের তরফেও এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করো হয়নি।

গত ৩১ ডিসেম্বব ওই আদালতের সভাপতি শঙ্করকুমার ঘোষ এবং সদস্য দেবী সেনগুপ্ত ও সমরেশকুমার মিত্র রায় দেন, বিমা সংস্থার সংশ্লিষ্ট দুই আধিকারিককে ওই ফোনের পুরো টাকা মিটিয়ে দিতে হবে সুপ্রদীপবাবুকে। এ ছাড়াও তাঁদের এবং দোকান-কর্তৃপক্ষকে আরও ১০ হাজার টাকা দিতে হবে তাঁর মানসিক যন্ত্রণা, উদ্বেগ এবং হয়রানির জন্য। মামলা চালানোর খরচ বাবদ তাঁদের থেকে আরও ১০ হাজার টাকা পাবেন সুপ্রদীপবাবু। আগামী এক মাসের মধ্যে ওই টাকা মেটানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সুরজিৎবাবু বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে নানা অছিলায় বিমা সংস্থা চুক্তি মোতাবেক টাকা দিতে চায় না। আদালতের পর্যবেক্ষণ, আবেদনের পদ্ধতিতে খুঁত না খুঁজে, সত্যতা থাকলেই অবিলম্বে বিমার টাকা মিটিয়ে দেওয়া।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Consumer Forum Money Mobile
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE