Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Shyampur

বধূকে পুড়িয়ে ‘খুন’, দগ্ধ শিশু

ইয়াসমিনার দাদা শেখ মুজিবর রহমান পুলিশকে জানিয়েছেন, গত সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ ইয়াসমিনা ও তার সন্তানকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে পালিয়ে যায়।

ইয়াসমিনা বেগম। নিজস্ব চিত্র।

ইয়াসমিনা বেগম। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্যামপুর শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:০১
Share: Save:

বিয়ের পর বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য এক তরুণীর উপর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ ছিলই। দেড় বছর আগে তরুণী কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার পরে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়ে বলেও অভিযোগ। তা নিয়ে তরুণীর সংসারে অশান্তি চলছিলই। এ বার ওই তরুণীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল। দগ্ধ হয়েছে শিশুটিও।

গত সোমবার শ্যামপুরের আয়মা গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসমিনা বেগম (২১) ও তাঁর সন্তানকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় একটি ঘর থেকে উদ্ধার করেন পড়শিরা। তাঁদের উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শুক্রবার সকালে ইয়াসমিনা মারা যান। শিশুটি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। অভিযুক্তেরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে আয়মা গ্রামের ইটভাটা-শ্রমিক সরিফুল মল্লিকের সঙ্গে শ্যামপুরের বাড়গড়চুমুকের শেখ সৈয়দের ছোট মেয়ে ইয়াসমিনার বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ইয়াসমিনাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিত। শ্বশুরবাড়ির কথা না শুনলে মারধর করা হত।

ইয়াসমিনার দাদা শেখ মুজিবর রহমান পুলিশকে জানিয়েছেন, গত সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ ইয়াসমিনা ও তার সন্তানকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে পালিয়ে যায়। ইয়াসমিনার প্রতিবেশীদের থেকে ফোনে তিনি এ কথা জানতে পেরে হাসপাতালে যান। সরিফুল-সহ বোনের শ্বশুরবাড়ির পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মুজিবরই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মুজিবরের অভিযোগ, ‘‘বিয়ের মাস আটেক পরে বোন রাগ করে বাপের বাড়ি চলে এসেছিল। শ্বশুরবাড়ির দাবিমতো টাকা দিয়ে বোনকে পাঠানো হয়। বোনের মেয়ে হওয়ার পর শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচার আরও বাড়ে। শিশুটির যাবতীয় খরচ আমরা বহন করতাম। মাস খানেক আগে মোটরবাইক কেনার জন্য দু’লক্ষ টাকা চায় বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। বোন রাজি না-হওয়ায় মারধর করত।’’ ইয়াসমিনার বাবা শেখ সৈয়দ বলেন, ‘‘এক বিঘা জমি বিক্রি করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। মেয়েকে ওরা পুড়িয়ে মারল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shyampur Murder Dowry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE