Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গান-দোতারায় স্বাস্থ্য পরিষেবা ফেরানোর দাবি

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, আগে এক জন চিকিৎসক আউটডোরে বসতেন। বছর দু’য়েক ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও চিকিৎসক নেই।  তবে গ্রামবাসীদের অভিযোগের পর সম্প্রতি সপ্তাহে দু’দিন এক জন চিকিৎসক আউটডোরে কয়েক ঘণ্টা রোগী দেখছেন।

গানের মাধ্যমে আন্দোলন। নিজস্ব চিত্র

গানের মাধ্যমে আন্দোলন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বৈদ্যবাটি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৯
Share: Save:

অভাব-অভিযোগ জানাতে মূলত বিক্ষোভকে হাতিয়ার করেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু এখানে ছবিটা আলাদা। শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের চাঁপসড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাল ফেরাতে সম্প্রতি শ্রুতিনাটক, গান, দোতারায় সুর তুললেন গ্রামবাসীরা।

কয়েক দশক আগে তৈরি হওয়া ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ইনডোর চালুর কথা ছিল। সেই মতো ভব‌ন, চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন— সবই রয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। উল্টে ভবনগুলি পোড়ো বাড়ির চেহারা নিচ্ছে। এই অবস্থায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ২৪ ঘণ্টা চালুর দাবিতে পথে নামেন স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, আগে এক জন চিকিৎসক আউটডোরে বসতেন। বছর দু’য়েক ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও চিকিৎসক নেই। তবে গ্রামবাসীদের অভিযোগের পর সম্প্রতি সপ্তাহে দু’দিন এক জন চিকিৎসক আউটডোরে কয়েক ঘণ্টা রোগী দেখছেন। তবে গ্রামবাসীরা এতে সন্তুষ্ট নন। তাঁদের দাবি, পুরোদস্তুর হাসপাতাল চালু করতে হবে। ওই দাবিতেই গত ৪ জানুয়ারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রাঙ্গণে সমাবেশের আয়োজন করেছিল চাঁপসরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বাঁচাও উদ্যোগ (প্রস্তুতি কমিটি)।

স্থানীয় উত্তর রাজ্যধরপুরের বাসিন্দা সুশান্ত রায় গান লিখেছেন ‘স্বাস্থ্য কোনও ভিক্ষা নয় / স্বাস্থ্য মোদের অধিকার’। এই গান গেয়েই আন্দোলন শুরু হয়। দোতারায় সঙ্গত করেন শ্যামল গায়েন এবং সুভাষ বর্মন। বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির অশোকনগর শাখার তরফে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অনুষ্ঠান করা হয়। সঙ্গে ছিল গান। স্বাস্থ্য বিষয়ক বেহাল পরিকাঠামোর কথা উঠে আসে একটি সংস্থার শ্রুতিনাটকে। গ্রামবাসীরা বক্তব্য রাখেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক শর্মিষ্ঠা গোস্বামীর হাতে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।

আয়োজক সংস্থার সভাপতি মনসা রায় জানান, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চলছে। ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার সই সংগ্রহ হয়েছে। তা ১০ হাজার হলে শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসকের দফতর অভিযান করা হবে। যত দিন দাবি পূরণ না হচ্ছে, তত দিন মাসে দু’দিন বিভিন্ন গ্রামে স্বাস্থ্য শিবির করা হবে। চলতি মাসের শেষ দিকে মা এবং শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে শিবির করা হবে। এর আগে আন্দোলনের অঙ্গ হিসেবে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, গণ-সমাবেশ হয়েছে। লিফলেট বিলি করা হয়েছে।

সমাবেশে ছিলেন শ্রমজীবী হাসপাতালের প্রতিনিধিরা। হাসপাতালের সহ-সম্পাদক গৌতম সরকার বলেন, ‘‘বহু জায়গাতেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র বেহাল। চিকিৎসার জন্য গরিব মানুষগুলোকে অন্যত্র ছুটতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নয়নের দাবিতে গ্রামবাসীরা যে লড়াই করছেন, এটা ভাল উদ্যোগ। সেই কারণেই আমরা সঙ্গে রয়েছি।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক না থাকাতেই সমস্যা হচ্ছে। তবে আপাতত সপ্তাহে দু’দিন করে নিয়মিত একজন চিকিৎসক আউটডোরে রোগী দেখবেন। নিয়োগ হলে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো হবে। তবে, ইনডোর চালুর ব্যাপারে কোনও আশার কথা স্বাস্থ্য দফতর শোনাতে পারেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Musical protest protest Baidyabati health service
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE