প্রতীকী ছবি।
‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্পে উপভোক্তাদের বরাদ্দ থেকে ১৮ হাজার টাকা কেটে আরামবাগ পুরসভার ত্রাণ তহবিলে জমা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে মহকুমাশাসকের (আরামবাগ) কাছে লিখিত নালিশ জানিয়েছিলেন পুরসভার পল্লিশ্রী এলাকার বাসিন্দা অর্চনা অধিকারী। সম্প্রতি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওই
বাসিন্দা মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে নতুন একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বার তাঁর দাবি, পুরসভায় ডেকে কাগজে টিপ সই করিয়ে তাঁকে দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে, তিনি ত্রাণ তহবিলে স্বেচ্ছায় অর্থ প্রদান করেছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গড়ে দিয়েছে মহকুমা প্রশাসন।
গত ১৫ অক্টোবর মহকুমাশাসকের কাছে দায়ের হয়েছে অভিযোগ। অর্চনার দাবি, ‘‘টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানিয়ে গত ৯ অক্টোবর আমাকে পুরসভায় ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে একটি খাতায় সই করতে বলা হয়। লেখাপড়া না-জানায় টিপ ছাপ দিই। কিন্তু আজ পর্যন্ত টাকা ফেরত পাইনি।’’ তাঁর অভিযোগ, “খোঁজ নিতে গেলে বলছে, আমি নাকি স্বেচ্ছায় টাকা দিয়েছি বলে লিখে দিয়েছি।” মহকুমাশাসকের কাছে তাঁর আর্জি, “আমি গরিব। চপ বেচে সংসার চালাই। কেটে নেওয়া ১৮ হাজার টাকা যাতে ফেরত পাই, তার ব্যবস্থা করুন।”
অর্চনাদেবীর অভিযোগ সম্পর্কে আরামবাগের পুর প্রশাসক স্বপন নন্দীর বক্তব্য, ‘‘ওই মহিলাকে দিয়ে সই করিয়ে নেওয়া হয়নি বলেই আমি জানি।’’ পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, উপভোক্তাদের কাছ থেকে ত্রাণ তহবিলে ১৮ হাজার টাকা নেওয়া বন্ধ করা হয়েছে।
মহকুমাশাসক (আরামবাগ) নৃপেন্দ্র সিংহ বলেন, “পুরো বিষয়টি তদন্তের জন্য পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসারকে নিয়ে তিন জনের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া
হবে।” পুরসভার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রকল্পে উপভোক্তাদের জন্য কোন বছরে কত অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, কোন বছরে কতগুলি রসিদ কাটা হয়েছে, কিসের জন্য কাটা হয়েছে, সেই সব রসিদ যাচাই করা হয়েছে কিনা, হয়ে থাকলে তা কে করেছেন— এই বিষয়গুলির খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমাশাসক।
গত ৬ অক্টোবর মহকুমাশাসকের কাছে অর্চনা অভিযোগ করেছিলেন, বাড়ি নির্মাণের জন্য বরাদ্দ থেকে পুরসভার ত্রাণ তহবিলে দান হিসাবে ১৮ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নথিও তিনি জমা দিয়েছিলেন।
এ প্রসঙ্গে পুর প্রশাসক স্বপন নন্দীর বক্তব্য ছিল, “শহরে মোট সাড়ে ৯ হাজার বাড়ি করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বাড়ি নির্মাণের পরে সেখানকার পরিকাঠামো তৈরি
করার জন্য উপভোক্তা পিছু প্রায় ১৮ হাজার টাকা খরচ। সেই হিসাবে ১৭ কোটির বেশি টাকা পুরসভাকে তার নিজস্ব তহবিল থেকে দিতে হবে। পুরসভার সেই তহবিল নেই। এই অবস্থায়, যে সকল উপভোক্তা পরিকাঠামো খাতের খরচ বহন করতে আগ্রহী ছিলেন না, কেবল তাঁদের থেকেই টাকা নেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy