Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পুরসভার অনুমতিতে চলে রান্নাও

আট ফুট বাই ছয় ফুট মাপের ছোট ছোট ৮০টি দোকানঘর। কী নেই সেখানে! কাপড়ের দোকান থেকে শুরু করে টেলিভিশন সেট, মোবাইল ফোন তো রয়েইছে। পাশে গজিয়ে উঠেছে একাধিক খাবারের দোকানও।

ভয়াবহ: মোবাইলের দোকানের পাশেই খাবারের দোকান। আগুন লাগতে পারে যে কোনও সময়ে। ছবি: সুব্রত জানা।

ভয়াবহ: মোবাইলের দোকানের পাশেই খাবারের দোকান। আগুন লাগতে পারে যে কোনও সময়ে। ছবি: সুব্রত জানা।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৫১
Share: Save:

আট ফুট বাই ছয় ফুট মাপের ছোট ছোট ৮০টি দোকানঘর। কী নেই সেখানে! কাপড়ের দোকান থেকে শুরু করে টেলিভিশন সেট, মোবাইল ফোন তো রয়েইছে। পাশে গজিয়ে উঠেছে একাধিক খাবারের দোকানও।

বাজারে ঢোকার মুখেই ঝুলছে বিদ্যুতের তার। কাপড়ের দোকানের পাশেই রান্না হচ্ছে উনুনে। অগ্নিনির্বাপণ কোনও ব্যবস্থাই নেই। শুধু তাই নয়, আগুন ধরলে দমকল যে কোন পথ দিয়ে আসবে, জানেন না কেউই।

অগ্নি-সুরক্ষা বিধি শিকেয় তুলে এ ভাবেই বছরে পর উলুবেড়িয়ার হেমন্ত বসু মার্কেট। আগুন লাগলে দমকল আসার আগেই সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যাবে না তো? এই আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন দোকানিরা।

উলুবেড়িয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, উলুবেড়িয়া হাইস্কুল, উলুবেড়িয়া ইনস্টিটিউট হল এবং রবীন্দ্রভবনের পাশে ৩২ বছর ধরে চলছে এই হেমন্ত বসু মার্কেট। আগে এই বাজারের দোকানিরা ফুটপাথে বসেই ব্যবসা করতেন। তবে বাজার বসার জেরে নিত্য যানজটের সমস্যা মেটাতে পুরসভা ১৯৮৬ সালে এই বাজারটি তৈরি করে দেয়। প্রতিটি দোকানির কাছ থেকে সেই সময়ে নেওয়া হয় তিন হাজার টাকা করে। সেই টাকায় দোকানঘর তৈরি করে তার মালিকানা দিয়ে দেওয়া হয় দোকানিদের। একই সঙ্গে পুরসভা কর্তৃপক্ষ প্রতিটি দোকানের জন্য ৫০ পয়সা বর্গফুট হিসাবে মাসিক ভাড়াও ধার্য করেছেন।

বাজারের ভিতরে ফুট তিনেক চওড়া পরিসর। তার দু’দিকে সার দিয়ে দোকানঘর। ঘিঞ্জি পরিবেশ। বাজারটির ছাউনি টালির। প্রথম থেকেই এই বাজারে নিজস্ব কোনও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। এখানে চারটি খাবারের দোকান আছে। গ্যাসের উনুনে রান্না হয়। সঙ্গে কয়লার আঁচেরও ব্যবস্থা আছে। খরিদ্দারদের অভিযোগ, বিভিন্ন দাহ্য জিনিসের পাশেই এ ভাবে আগুনের ব্যবহারের ফলে যে কোনও দিনই বাজার পুড়ে ছাই হয়ে যেতে পারে।

দোকানি উত্তম রায়ের ক্ষোভ, ‘‘আমরা এই বাজারের ভরসায় সংসার চালাই। আগুনে পুড়ে জিনিস নষ্ট হয়ে গেলে খাব কী?’’ তাঁর কথায়, ‘‘বাজারে অবিলম্বে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা করা দরকার।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের সকলের ব্যবহােরর জন্য একটি মিটার ঘর ছিল। সবাই আলাদা আলাদা করে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে নিয়েছি। তাই মিটার ঘরটির আর প্রয়োজন নেই। সেখানেই তো অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা করা যায়।’’ তিনি জানান, এই দাবি পুরসভার কাছেও করা হয়েছে।

খাবারের দোকানের মালিকদের অভিযোগ অন্য। তাঁদের অভিযোগ, উনুন জ্বালিয়ে দোকান চালাবেন সেই শর্তে পুরসভা তাঁদের স্টল দিয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে তাঁদের কখনও বলা হয়নি গ্যাস বা কয়লার উনুন এখানে জ্বালানো যাবে না।

উলুবেড়িয়ার পুরপ্রধান অর্জুন সরকারের দাবি, ‘‘হেমন্ত বসু মার্কেটে অবশ্যই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকা উচিত। শীঘ্রই এ বিষয়ে দোকানদারদের নিয়ে আলোচনায় বসা হবে।’’ অন্য দাহ্য বস্তুর পাশেই এ ভাবে খাবারের দোকানের অনুমতি দেওয়া হল কেন? অর্জুনবাবুর উত্তর, ‘‘কী ভাবে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছিল জানি না। এসবও বন্ধ হওয়া দরকার। এ বিষয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uluberia Fire উলুবেড়িয়া
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE