Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বিমা নেই ফুলে, প্রশ্ন ক্ষতিপূরণে

এ বারের বৃষ্টিতে আলু ও আনাজের ক্ষতি হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন চাষিরা। এ বার ফুল চাষিরাও একই সমস্যায় পড়লেন। জেলা উদ্যানপালন বিভাগ থেকেও বৃষ্টিতে ফুল চাষে ক্ষতির কথা স্বীকার করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ফুলচাষিরা ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন।   

আকাশে ফের মেঘের আনাগোনা। ফুলে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষি। নিজস্ব চিত্র

আকাশে ফের মেঘের আনাগোনা। ফুলে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষি। নিজস্ব চিত্র

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৮
Share: Save:

ভরা ফাগুনে টানা চার দিনের বৃষ্টিতে ক্ষতি থেকে রেহাই পেলেন না হাওড়া জেলার ফুলচাষিরাও। কোথাও ফুল গাছের গোড়ায় জল জমেছে। কোথাও গাছ ভেঙেই গিয়েছে। সামনেই শিব চতুর্দশী। ওই সময়ে ফুল পেতে সমস্যা হবে বলে আশঙ্কা করছেন চাষিরাই।

এ বারের বৃষ্টিতে আলু ও আনাজের ক্ষতি হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন চাষিরা। এ বার ফুল চাষিরাও একই সমস্যায় পড়লেন। জেলা উদ্যানপালন বিভাগ থেকেও বৃষ্টিতে ফুল চাষে ক্ষতির কথা স্বীকার করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ফুলচাষিরা ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন।

হাওড়া জেলায় বাগনান, শ্যামপুর এবং উলুবেড়িয়ায় ফুলের চাষ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ফুল চাষ হয় বাগনানে। প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার তার সঙ্গে যুক্ত। চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, গোলাপ, জবা, চেরি, জিনিয়া সূর্যমূখী, ডালিয়া, রজনীগন্ধা প্রভৃতি ফুলের চাষ হয় এখানে। বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে সব ধরনের ফুল গাছেরই,

এমনটাই দাবি চাষিদের। তাঁদের বক্তব্য, শুধু বৃষ্টি নয়, সঙ্গে ছিল ঝড় এবং শিলাবৃষ্টি। তাতেই ক্ষতির বহর বেড়েছে। অধিকাংশ গাছ ঝড়ে ভেঙে গিয়েছে। আবার গাঁদা ফুলের গাছের গোড়ায় জল জমে গিয়েছে। ফলে, গোড়া পচে গাছগুলি মারা যাচ্ছে। অনেক গাছের ফুল মাটিতে ঝরে পড়ে নষ্ট হয়েছে।

বাঁকুড়দহ গ্রামের বাসিন্দা পুলক ধাড়া বলেন, ‘‘আমি দু’বিঘা জমিতে ফুল চাষ করেছিলাম। ঝড়বৃষ্টিতে প্রায় সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ ভোলানাথ ধাড়া ১০ কাঠা জমিতে সূর্যমুখী, ডালিয়ার মতো মরসুমী গাছ লাগিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার চারা লাগিয়েছিলাম। বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’

ক্ষতিগ্রস্ত ফুল চাষিরা জানিয়েছেন, তাঁদের অনেকে কিসান ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছেন। ফুল গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাঁরা কী ভাবে ঋণ শোধ করবেন তা বুঝতে পারছেন না। ‘সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতি’র রাজ্য সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, ‘‘ফুল চাষিদের যাতে ফসল-বিমার আওতায় আনা যায়, সে জন্য রাজ্য সরকারের কাছে একাধিকবার দাবি জানিয়েছি। বার বার যে ভাবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফুল চাষ নষ্ট হচ্ছে তাতে বিমা না-থাকলে চাষিরা ব্যাঙ্ক ঋণ শোধ করতে পারবেন না। টাকার অভাবে ফের চাষও করতে পারবেন না।’’

জেলা কৃষি দফতরের কর্তারা অবশ্য জানান, এখনও ফসল-বিমার আওতায় ফুলকে আনা হয়নি। সেই কারণে ফুল চাষিরা বিমার টাকা পাবেন না। তবে তাঁদের অন্য ভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাবে কিনা সেটা নির্ভর করবে সরকারের সিদ্ধান্তের উপরে। এ ব্যাপারে তাঁদের কাছে কোনও নির্দেশিকা আসেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rain Flower Culivation Loss Compensation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE