Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

পথ-কুকুরকে ইট, প্রতিবাদে আক্রান্ত প্রৌঢ়

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত শেখ আবদুল্লা আনসারিকে শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাসপাতালে জখম মহম্মদ হাসান আলি। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালে জখম মহম্মদ হাসান আলি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:২৮
Share: Save:

রাস্তার কুকুরকে ইট মারার প্রতিবাদ করেছিলেন প্রৌঢ়। এই ছিল ‘অপরাধ’। সেই কারণে ওই প্রৌঢ়কে ভোজালি দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠল এলাকারই এক মদ্যপ যুবকের বিরুদ্ধে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার রাতে হামলার ঘটনাটি ঘটে পান্ডুয়ার ভেজনপুর গ্রামে। মহম্মদ হাসান আলি সরকার নামে পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই প্রৌঢ়কে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর মাথা, ঘাড় ও মুখে মোট ১৬টি সেলাই পড়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত শেখ আবদুল্লা আনসারিকে শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আবদুল্লা বেশির ভাগ দিনই মদ খেয়ে রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে চিৎকার করে গালিগালাজ করতে থাকে। শুক্রবারও রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ সে একই ভাবে ফিরছিল। রাস্তার কয়েকটি কুকুর পিছু নেওয়ায় সে ইট মারতে থাকে। কুকুরগুলি চিৎকার করে ওঠে। সেই সময়ে ওই পথ দিয়ে ফিরছিলেন হাসান আলি। তিনি আবদুল্লার আচরণের প্রতিবাদ করেন। দু’জনের বচসা শুরু হয়। আচমকা আবদুল্লা কোমর থেকে ভোজালি বের করে ওই প্রৌঢ়ের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন হাসান আলি। তাঁর আর্তনাদে স্থানীয়েরা ঘটনাস্থলে চলে আসেন। আবদুল্লা পালানোর চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলেন। আবদুল্লাকে একটি দোকানে আটকে রেখে খবর দেওয়া হয় পুলিশে।

হাসান আলিকে প্রথমে পান্ডুয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে স্থানান্তরিত করানো হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে। শনিবার হাসান আলির পরিবারের পক্ষ থেকে আবদুল্লার বিরুদ্ধে হামলা ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয় থানায়। হাসান আলি বলেন, ‘‘কুকুরগুলো আবদুল্লার পিছু নিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু ও যে ভাবে ইট ছুড়ছিল, প্রতিবাদ না-করে পারিনি। এতে আবদুল্লারও বিপদ হতে পারত। কিন্তু ও অস্ত্র নিয়ে হামলা করল। আগেও ওর কিছু আচরণে আপত্তি জানিয়েছিলাম। এ দিন সুযোগ পেয়ে সেই রাগ মিটিয়ে নিল। গ্রামবাসীরা না-এলে হয়তো মেরেই ফেলত!’’

এই হামলার পরে আবদুল্লার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন গ্রামবাসীদের অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, আবদুল্লা রাতে মদ্যপ অবস্থায় এর আগেও বেশ কয়েকবার অশান্তি করেছে। একজনের মারধরের ঘটনায় তাকে হাজতবাসও করতে হয়েছে। বাড়িতেও সে অত্যাচার চালায়। হাসান আলির ছেলে হাবিব সরকার বলেন, ‘‘একটা মানুষের জন্য এলাকার সুনাম নষ্ট হচ্ছে।’’

আবদুল্লার স্ত্রী রেহেনা বেগম হামলার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘রাতে মদ খেলেই ও অত্যাচারী হয়ে ওঠে। এলাকার একজন প্রৌঢ়ের উপরে হামলা চালিয়ে খুবই অন্যায় কাজ করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE