Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

শান্তির দাবিতে মিছিল দুই জেলায়

নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শুক্র ও শনি— দু’দিন ধরে বিক্ষোভ-অবরোধ-হামলায় জেরবার হয়েছেন উলুবেড়িয়াবাসী। ট্রেনে-স্টেশনে ভাঙচুর আটকানো যায়নি। রাস্তায় বেরিয়ে ট্রেন-বাস না-পেয়ে বিপাকে পড়েন বহু মানুষ।

বার্তা: বাগনানে নাগরিক সমাজের উদ্যোগে শান্তি মিছিল। —নিজস্ব সংবাদদাতা

বার্তা: বাগনানে নাগরিক সমাজের উদ্যোগে শান্তি মিছিল। —নিজস্ব সংবাদদাতা

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাগনান ও ফুরফুরা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৩৯
Share: Save:

দু’দিন পরে রবিবার দুর্ভোগের হাত থেকে কিছুটা রেহাই পেলেন হাওড়ার উলুবেড়িয়ার বাসিন্দারা। এনআরসি এবং নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এ দিন আমতা, পাঁচলা এবং জগৎবল্লভপুরের একাধিক জায়গায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করা হলেও কোনও অশান্তি হয়নি। তবে, হুগলির ডানকুনিতে গোলমাল হয়েছে। এ দিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পক্ষে মিছিল বেরোয় বাগনান এবং ফুরফুরায়।

নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শুক্র ও শনি— দু’দিন ধরে বিক্ষোভ-অবরোধ-হামলায় জেরবার হয়েছেন উলুবেড়িয়াবাসী। ট্রেনে-স্টেশনে ভাঙচুর আটকানো যায়নি। রাস্তায় বেরিয়ে ট্রেন-বাস না-পেয়ে বিপাকে পড়েন বহু মানুষ। রবিবার অবশ্য সে চিত্র আর দেখা যায়নি। উলুবেড়িয়া স্টেশন রোডে ফ্ল্যাগমার্চ করে পুলিশ। বিকেলে বাগনানে শান্তি-মিছিল করে নাগরিক সমাজ। তাতে শামিল হন আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র এবং বাগনানের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক আক্কেল খান-সহ হিন্দু ও মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের বহু সাধারণ মানুষ।

আক্কেল বলেন, ‘‘আমাদের এই কর্মসূচি ছিল মূলত নয়া নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে। তার সঙ্গে রাজ্য জুড়ে যে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তাতে মানুষের মধ্যে বিশ্বাসের অভাব দেখা দিয়েছে। শান্তি এবং সম্প্রীতির জন্য পথে নেমেছি।’’ অসিতবাবু বলেন, ‘‘নয়া আইন এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। কিন্তু এখন আশু প্রয়োজন শান্তি প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পরস্পরের মধ্যে আস্থা প্রতিষ্ঠা করা।’’ নয়া আইনের প্রতিবাদে এ দিন বিকেলে উলুবেড়িয়া পুর এলাকাতে মিছিল করে তৃণমূলও। মিছিল থেকে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া হয়।

শান্তি-মিছিল হয় হুগলির ফুরফুরাতেও। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে ওই মিছিল এলাকার মাজার থেকে তালতলা হাট পর্যন্ত পরিক্রমা করে। তাতে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদারাও ছিলেন। ফুরফুরা শরিফের পক্ষে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘‘বাস-ট্রেনের মতো সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে হিংসাত্মক আন্দোলনে লাভ নেই। শান্তিপূর্ণ ভাবেই নয়া আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে।’’

এ দিন গোলমাল হয় ডানকুনিতে। নয়া আইনের প্রতিবাদে বিকেলে আধ ঘণ্টা নীচ ডানকুনিতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের কলকাতামুখী ‘লেন’ অবরোধ করা হয়। তারপরে ডানকুনি হাউজিং মোড়ে পথসভা হয়। সভা চলাকালীন এক যুবক ঢুকে পড়ায় সন্দ্হের বশে তাঁকে মারধর করা হয়। তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকে নিগ্রহ করা হয়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। শেষে ডানকুনি উড়ালপুলের নীচে বিজেপি-র একটি দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে আসবাবে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। সেই সময় তারা একটি গাড়িও ভাঙচুর করে। দুই বিজেপি কর্মী আক্রান্ত হন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

বিকেলে বিজেপি আবার নয়া আইনের পক্ষে ডানকুনি কালীপুর মোড় থেকে মিছিল বের করলে পুলিশ গিয়ে হটিয়ে দেয়। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, ওই মিছিলের জন্য পুলিশের কাছ থেকে বিধিবদ্ধ অনুমতি নেওয়া হয়নি। নয়া আইনের প্রতিবাদে তৃণমূল চণ্ডীতলায় মিছিল করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Violence Peace Rally CAA NRC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE