Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পরিস্রুত জল মিলল স্বাধীনতার ৭২ বছর পরে

স্বাধীনতার পর থেকেই পানীয় জলের জন্য এত দিন গাঁটের কড়ি খরচ করতে হত আটটি পঞ্চায়েত এলাকার লক্ষাধিক বাসিন্দাদের। অথবা কয়েক কিলোমিটার দূরের বালি, দক্ষিণেশ্বর এবং বরাহনগরের পুর এলাকা থেকে ব্যারেলে করে জল নিয়ে আসতে হত তাঁদের।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২৮
Share: Save:

পরিস্রুত পানীয় জল পেতেই সময় পেরিয়ে গেল ৭২ বছর!

স্বাধীনতার পর থেকেই পানীয় জলের জন্য এত দিন গাঁটের কড়ি খরচ করতে হত আটটি পঞ্চায়েত এলাকার লক্ষাধিক বাসিন্দাদের। অথবা কয়েক কিলোমিটার দূরের বালি, দক্ষিণেশ্বর এবং বরাহনগরের পুর এলাকা থেকে ব্যারেলে করে জল নিয়ে আসতে হত তাঁদের। পানীয় জল পাওয়ার জন্য এটাই ছিল বালি-জগাছা ব্লকের বাসিন্দাদের রোজনামচা। অবশেষে সেই সমস্যা মিটল। এ বার থেকে বাড়িতেই পানীয় জলের সংযোগ পাবেন বাসিন্দারা। পাশাপাশি রাস্তার কলেও দিনে তিন বার করে মিলবে পরিস্রুত পানীয় জল। বৃহস্পতিবার সেই জল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী মলয় ঘটক ও অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা।

ডোমজুড় বিধানসভার এই ব্লকের আটটি পঞ্চায়েত মিলিয়ে মোট জনসংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৮৭ হাজার। এলাকার গভীর নলকূপের জলে আর্সেনিকের মাত্রা বেশি থাকায় তা পানের অযোগ্য। বাম আমল থেকে শুরু করে বর্তমান তৃণমূল সরকারের আমলেও বাসিন্দাদের প্রধান চাহিদা ছিল, এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। ২০১৪ সালে স্থানীয় বিধায়ক উদ্যোগী হয়ে বালি-জগাছা ব্লকে জল প্রকল্প তৈরির প্রস্তাব জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে পাঠান। ওই বছরই তৎকালীন জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। বিভিন্ন সমস্যা কাটিয়ে চার বছর সময় লাগল প্রকল্পটি চালু করতে।

হাওড়া পুর এলাকার অন্তর্গত বালির জেটিয়া ঘাটে তৈরি হয়েছে প্রকল্পের ইনটেক জেটি। সেখানে গঙ্গা থেকে জল তুলে পাঠানো হবে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে দুর্গাপুর অভয়নগর ১ ও ২ নম্বর পঞ্চায়েতের সংযোগস্থলে ইটভাটার পাশে তৈরি হওয়া জল পরিশোধনাগারে। সেখান থেকে বালি-জগাছা ব্লকের চারটি ওভারহেড জলাধারে পাঠানো হবে পরিস্রুত জল। রাজীববাবু জানান, প্রকল্প উদ্বোধনের পরেই দুর্গাপুর-অভয়নগর ১ ও ২ নম্বর পঞ্চায়েতে জল সরবরাহ শুরু হবে। মার্চ থেকে বালি, নিশ্চিন্দা, সাঁপুইপাড়া-বসুকাটি এবং চকপাড়া-আনন্দনগর পঞ্চায়েতেও ওই জল মিলবে। তিন মাস পরে দ্বিতীয় পর্যায়ে চামরাইল ও জগদীশপুর পঞ্চায়েতেও এই প্রকল্প থেকে জল পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, ‘‘পরিস্রুত পানীয় জল দেওয়াটা ন্যূনতম নাগরিক পরিষেবার মধ্যে পড়ে। কিন্তু তা থেকে এত বছর বঞ্চিত ছিলেন বাসিন্দারা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সহায়তায় পুরো কাজটি করা সম্ভব হয়েছে।’’

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকেরা জানান, প্রকল্পটির দেখভাল তাঁরা করলেও বাড়িতে জলের সংযোগের জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েতের ওয়ার্টার অ্যান্ড স্যানিটেশন কমিটির কাছে আবেদন করতে হবে বাসিন্দাদের। এই প্রকল্প রূপায়ণে মোট খরচ হয়েছে প্রায় ১৫১ কোটি টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Treatment Plant Fresh Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE