সুনসান: বন্ধ দোকান, নেই লোকজন।
যেন অঘোষিত বন্ধ!
বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ। রাস্তায় লোকজন কম। মোতায়েন পুলিশ।
শুক্রবার রাতে হরিপালের পাঁটরা হাটতলা এলাকায় এক সোনার দোকানের সামনে বোমাবাজি এবং তারপর ওই দোকানের মালিককে কুপিয়ে, গুলি করে দুষ্কৃতীরা যে ভাবে লুটপাট চালায়, সেই আতঙ্ক শনিবারেও কাটেনি এলাকাবাসীর। পুলিশ থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় লোকজন এ দিন ওই ঘটনা নিয়ে কথা বলতেও ভয় পাচ্ছিলেন। বিকেল পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বিমল সাঁতরা নামে জখম ওই ব্যবসায়ীকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর ডান হাতে ভোজালির কোপ পড়েছে। দুষ্কৃতীদের একটি গুলি লাগে তাঁর পাঁজরের ডান দিকে।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতেই অস্ত্রোপচার করে বিমলবাবুর পাঁজর থেকে গুলিটি বের করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এ দিন হাসপাতালে ভাইয়ের কাছেই ছিলেন বিমলবাবুর দাদা পরিমল। তিনি বলেন, ‘‘গয়না কী পরিমাণ খোয়া গিয়েছে, তা ভাই-ই বলতে পারবে। দুষ্কৃতীরা ক্যাশবাক্সে থাকা টাকা নিয়েও পালায়। ভাই তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ফিরুক, এটাই চাইছি।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিপালের অলিপুরের বাসিন্দা বিমলবাবু। পাঁটরা হাটতলার একটি মার্কেটে সাত বছর ধরে সোনার দোকান চালাচ্ছেন তিনি। প্রতিদিন দোকান বন্ধ করেন রাত ১০টা নাগাদ। শুক্রবার রাত সওয়া ৮টা নাগাদ দোকানে কোনও ক্রেতা ছিলেন না। ছিলেন না কোনও কর্মীও। দোকানে একাই ছিলেন বিমলবাবু। তবে, আশপাশে চায়ের দোকান এবং অন্য দোকানগুলিতে লোকজন ছিলেন। দুষ্কৃতীরা বেপরোয়া ভাবে বিমলবাবুর দোকানে হামলা চালায়। তার আগে সাড়ে ৭টা নাগাদ দুষ্কৃতীরা ক্রেতা সেজে জড়ো হয়েছিল ওই মার্কেটেই বিমলবাবুর দোকানের সঙ্গে একই সারিতে থাকা একটি হোটেলে।
হোটেল-মালিক শ্রীকান্ত মণ্ডল ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি জানান, দুষ্কৃতীরা ছ’সাত জন ছিল। তাদের বয়স ২০-২৫ বছরের মধ্যে। সকলে বাংলাতেই কথা বলছিল। তারা চারটি এগরোল এবং দু’প্লেট চাউমিন ‘অর্ডার’ দেয়। খাওয়া সেরে কিছুক্ষণ গল্পগুজব করে তারা দাম মিটিয়ে বেরোয়। তারপরই দুই যুবক বিমলবাবুর দোকানের দিকে দু’টি বোমা ছোড়ে। এরপরেই ভয়ে শ্রীকান্তবাবু হোটেল ছেড়ে পালান।
আতঙ্কে অন্য লোকজনও ছুটতে থাকেন। অনেক ব্যবসায়ী নিজেদের দোকানের শাটার নামিয়ে দেন। সেই ফাঁকে দুই দুষ্কৃতী বিমলবাবুর দোকানে ঢুকে লুটপাট শুরু করে। বিমলবাবু বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন বলে আর এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন। লুটপাট চালিয়ে দুষ্কৃতীরা বোমা ছুড়তে ছুড়তে হেঁটেই এলাকা ছাড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি না-ফাটা বোমা এবং গুলির খোল উদ্ধার করে পুলিশ। বিমলবাবুকে প্রথমে হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। দুষ্কৃতীরা ওই এলাকার নয় বলে দাবি করেন কেউ কেউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy