Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

শীতের টানেও রূপ খোলেনি গড়চুমুকের

পুজোর ছুটি শেষ। শীতের টান পড়তে শুরু করেছে হাওয়ায়। আর এরই মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে সপ্তাহান্তিক ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার ধুম। কিন্তু আগাছায় মুখ লুকিয়ে আছে গড়চুমুক। অভিযোগ, জেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্রে পরিকাঠামো প্রায় ভেঙে পড়েছে। তবু হেল দোল নেই হাওড়া জেলা পরিষদের।

অবহেলা: আগাছায় ভরেছে গোটা এলাকা

অবহেলা: আগাছায় ভরেছে গোটা এলাকা

সুব্রত জানা 
শ্যামপুর শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৯
Share: Save:

পুজোর ছুটি শেষ। শীতের টান পড়তে শুরু করেছে হাওয়ায়। আর এরই মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে সপ্তাহান্তিক ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার ধুম। কিন্তু আগাছায় মুখ লুকিয়ে আছে গড়চুমুক। অভিযোগ, জেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্রে পরিকাঠামো প্রায় ভেঙে পড়েছে। তবু হেল দোল নেই হাওড়া জেলা পরিষদের।

হাওড়া জেলার শেষ প্রান্তে শ্যামপুরে ভাগীরথী ও দামোদরের ধারে গড়ে তোলা হয়েছিল গড়চুমুকে পর্যটন কেন্দ্র। আটের দশকের গোড়ার দিকে প্রায় ১০৭ হেক্টর জমির উপর পর্যটন কেন্দ্র গড়েছিল হাওড়া জেলা পরিষদ। তার পর থেকে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে ক্রমশ। সারা বছরই বহু দূর থেকে এখানে আসেন মানুষ। পিকনিক তো বটেই, পরিবার নিয়ে কিছুক্ষণ সময়ও কাটিয়ে যান অনেকে।

এখানে রয়েছে হরিণ প্রকল্প, বেশ কিছু ময়ূর ও পাখি। পুকুরে রয়েছে কিছু কুমির, নানা প্রজাতির কচ্ছপ। শীতের ভিড় উপচে পড়ে। নভেম্বর মাস থেকে শুরু হয়ে যায় পিকনিকের হুড়োহুড়ি। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে গড়চুমুকে ঢুকলেই চোখে পড়েছে বড় বড় ঘাস। ভাঙা রাস্তা। পর্যটকদের জন্য তৈরি করা শৌচাগারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে তালা। পানীয় জলের কল চাপা পড়েছে আগাছায়। শিশু উদ্যানের রাস্তা দেখা যায় না, সেখানেও আগাছার দৌরাত্ম্য। হরিণ প্রকল্পে ঢুকতে গেলে ঠেলতে হয় পার্থেনিয়ামের বন। পথবাতি জ্বলে না বলেও অভিযোগ।

রাস্তাতে পিচের প্রলেপ পড়েনি বহুদিন।

এরই মধ্যে ভিড় জমছে গড়চুমুকে। তারপর এলাকার চেহারা আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এখানে ওখানে পড়ে রয়েছে থার্মোকলের থালা, বাটি, পলিথিনের প্যাকেট। উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা মিঠু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছুটির দিনে ছেলেমেয়েকে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু হরিণ দেখব কোথায়, এ তো ঢোকাই দায়। চার দিকে নোংরা। দেওয়ালে লেখা ‘আপনি সিসি ক্যামেরার নজরদারির আওতায়’, কিন্তু ওগুলো আদৌ চলে তো! কোনও অপরাধও ঘটে যেতে পারে এখানে।’’ আর এক পর্যটক অমিতাভ রায় বলেন, ‘‘ভিতরে ঢুকতেই তো ভয় করছে। এমন জঙ্গলে সাপখোপ থাকবেই। তার দায় কে নেবে?’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর পর থেকেই শুরু হয়েছে ঘাস কাটার কাজ। আগাছা সাফাই হয়ে যাবে পুরোপুরি পিকনিক মরসুম শুরু হওয়ার আগেই। কিন্তু ভাঙা রাস্তা, আবর্জনায় ভরা উদ্যানে পর্যটক আসবেন কেন?

জেলা পরিষদের দাবি, গড়চুমুক দেখভালের জন্য মাত্র ৬ জন কর্মী রয়েছেন। তাঁদের পক্ষে অত বড় এলাকা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। হাওড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘পর্যটন কেন্দ্রকে নতুন করে ঢেলে সাজার পরিকল্পনা রয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। পিকনিকের মরসুমের আগেই আমরা সমস্ত পরিষ্কার করে দেব।’’

নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Garchumuk Tourist Spot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE