একটি জলসত্র শিবিরে হাঙ্গামা এবং মহিলা জলযাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে হরিপাল মহাবিদ্যালয়ের তিন ছাত্রকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার রাতে ধৃত ওই তিন জনই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) কর্মী। তবে, মূল অভিযুক্ত, ওই কলেজের টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সভাপতি সুমিত সরকারকে পুলিশ ধরতে পারেনি। পুলিশের দাবি, সুমিত-সহ পাঁচ জন পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
সংগঠনের জেলা টিএমসিপি-র সহ সভাপতি কৌশিক শীল বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। কেউ যদি দোষ করে থাকে, তা হলে সাজা পাবে।’’ অনেক চেষ্টা করেও সুমিতের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম নালিকুলের বাগানবাটি এলাকায় একটি ক্লাবের পক্ষ থেকে শ্রাবণী মেলার জলযাত্রীদের জন্য একটি জলসত্র শিবির করা হয়। অভিযোগ, সুমিতের নেতৃত্বে টিএমসিপি-র ছেলেরা সেখানে হাঙ্গামা করে। তাঁদের সঙ্গে গ্রামবাসীদের গোলমাল হয়। ওই কলেজ-ছাত্ররা মহিলা জলযাত্রীদের শ্লীলতাহানি করে। জলযাত্রীদের মারধর করা হয়। জলসত্র শিবিরে ভাঙচুরও চালানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। রাতেই হরিপাল পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মিলন দে পুলিশের কাছে সুমিত-সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতেই হরিপাল থানার ওসি বঙ্কিম বিশ্বাস তিন জনকে গ্রেফতার করেন। ধৃতদের সোমবার চন্দননগর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তিন জনকেই সাত দিন জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জলসত্র শিবিরে গোলমালের ঘটনায় সুমিতের নাম জড়ানোয় জেলা তৃণমূল নেতাদের একাংশ অস্বস্তিতে। কেননা, এর আগেও সুমিত অনেকবার নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। মাস পাঁচেক আগে দলবল নিয়ে হরিপালের একটি পানশালায় ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। পরে জামিন পেলেও তাঁর দৌরাত্ম্য যে বন্ধ হয়নি সে কথা জেলা তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ স্বীকারও করেছেন। দলের অন্দরেই হরিপালের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বেচারাম মান্নার ‘স্নেহভাজন’ বলে পরিচিত ডাকাবুকো সুমিতকে নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। জেলা টিএমসিপি-র এক নেতা বলেন, ‘‘দলের নেতাদের নেকনজরে থাকার জন্যই সুমিতের এতো দৌরাত্ম্য।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের ছাত্র সংগঠনের জেলা সভাপতিকে বলেছি, ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে। সেই রিপোর্ট পেলেই দলীয় স্তরে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। কেউ দোষী হলে ছাড়া পাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy