Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Plastic Carrybag factory

প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ কারখানা ‘সিল’

পুর-কর্তারা বলছেন, এই শহরের নিকাশি ব্যবস্থা উন্নত নয়। প্লাস্টিক ব্যবহারে তা আরও বেহাল হয়ে পড়ে। সর্বোপরি, পরিবেশ দূষিত হয়। সেই কারণেই অভিযানের কর্মসূচি নেওয়া হয়। অভিযান চলবে বলে পুরপ্রধান জানিয়েছেন।

অবৈধ: কারখানায় তৈরি হচ্ছিল প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ। নিজস্ব চিত্র

অবৈধ: কারখানায় তৈরি হচ্ছিল প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেওড়াফুলি শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ০১:০২
Share: Save:

পাতলা ক্যারিব্যাগের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি বৈদ্যবাটী পুর এলাকায়। এ বার পুর কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযান চালিয়ে ওই ধরনের ক্যারিব্যাগ রাখার অভিযোগে বেশ কয়েকটি গুদাম এবং তা তৈরির একটি কারখানা ‘সিল’ করে দেওয়া হল। বুধবার শেওড়াফুলি হাট-সহ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চলে।

পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘সাইনবোর্ড লাগিয়ে, মাইকে ঘোষণা করে, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে আমরা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধের আর্জি জানিয়েছি। এতে অনেকটাই সুফল মিলেছে। বহু মানুষ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ না-নেওয়া অভ্যাস করে ফেলেছেন। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কিছুতেই এটা করছিলেন না। সেই কারণেই এই পদক্ষেপ।’’

বুধবার দুপুরে পুরসভার স্যানিটারি ইনস্পেক্টর কৃষ্ণেন্দু কুণ্ডু এবং স্যানিটারি অ্যাসিস্ট্যান্ট সবুজ হালদার সাফাই বিভাগের কর্মীদের নিয়ে অভিযান চালান। সঙ্গে ছিল শেওড়াফুলি ফাঁড়ির পুলিশ। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, শেওড়াফুলি হাট চত্বরে টিনবাজারে এক ব্যবসায়ীর সাতটি গুদাম ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। আরও দুই ব্যবসায়ীর গুদাম ‘সিল’ করা হয়। এই ব্যবসায়ীরা ক্যারিব্যাগের ডিস্ট্রিবিউটার।

একটি দোকানে দেখা যায়, সামনে কাপড়ের ব্যাগ রাখা। কিন্তু ভিতরে প্লাস্টিক মজুত। ওই ব্যবসায়ীকে ৩০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। মজুত থাকা প্রায় এক গাড়ি প্লাস্টিকও বাজেয়াপ্ত করা হয়। এরপরে শেওড়াফুলির বিহারী কুণ্ডু লেনে একটি ছোট কারখানাতেও হানা দেন পুর-আধিকারিকরা। সেখানে দেখা যায়, খুব পাতলা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ তৈরি হয়। কারখানাটি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়।

স্যানিটারি ইনস্পেক্টর কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘এক বার ব্যবহার করে ফেলে দিতে হয় মূলত এমন ক্যারিব্যাগ ব্যবহারেই নিষেধাজ্ঞার কথা সরকারের তরফে আইন করে বলা হয়েছে। আমরা বিষয়টা নিয়ে মানুষকে লাগাতার সচেতন করছি। কিন্তু এক শ্রেণির ব্যবসায়ী কিছুতেই তা শুনছিলেন না। ওই সব ডিস্ট্রিবিউটর এবং কারখানা মালিককে এর আগে চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল।’’ পুরপ্রধান জানান, প্লাস্টিক বা খোলা জায়গায় শৌচের বিষয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য পুরসভার তরফে হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। তাতে অনেকেই জানান, লুকিয়ে-চুরিয়ে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বিক্রি করছেন কিছু ব্যবসায়ী। অভিযানে হাতেকলমে বিষয়টি ধরা পড়ল।

গত বছর বৈদ্যবাটী পুরসভার দেড়শো বছর পূর্ণ হয়। সেই সময় পুর-কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছিলেন, তাঁদের লক্ষ্য ‘প্লাস্টিকমুক্ত’ শহর। তখন থেকেই প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধ করতে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রচারের পাশাপাশি ঠিক হয়, এই ধরনের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করলে বিক্রেতাকে ৫০০ টাকা এবং ক্রেতাকে ৫০ টাকা জরিমানা করা হবে। অন্য আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে। জরিমানা করার উদাহরণও রয়েছে। এ বার আরও কড়া পদক্ষেপ করা হল।

পুর-কর্তারা বলছেন, এই শহরের নিকাশি ব্যবস্থা উন্নত নয়। প্লাস্টিক ব্যবহারে তা আরও বেহাল হয়ে পড়ে। সর্বোপরি, পরিবেশ দূষিত হয়। সেই কারণেই অভিযানের কর্মসূচি নেওয়া হয়। অভিযান চলবে বলে পুরপ্রধান জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Plastic Carry Bag Environment pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE