Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হাওড়ায় ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ

হাওড়ার ব্যাঁটরায় মহিলাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ধৃত শ্রীমন্ত ঘোষ পুনর্নির্মাণের সময়ে দেখিয়েছে, যৌন নির্যাতনের পরে কী ভাবে সে ওই মহিলার মাথায় হামানদিস্তা দিয়ে বারবার আঘাত করে।

অকুস্থলে: ধৃত শ্রীমন্ত ঘোষকে (ইনসেটে) নিয়ে সোমবার ঘটনাস্থলে পুলিশ। হাওড়ার ব্যাঁটরায়। নিজস্ব চিত্র

অকুস্থলে: ধৃত শ্রীমন্ত ঘোষকে (ইনসেটে) নিয়ে সোমবার ঘটনাস্থলে পুলিশ। হাওড়ার ব্যাঁটরায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০৩
Share: Save:

হাওড়ার ব্যাঁটরায় মহিলাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ধৃত শ্রীমন্ত ঘোষ পুনর্নির্মাণের সময়ে দেখিয়েছে, যৌন নির্যাতনের পরে কী ভাবে সে ওই মহিলার মাথায় হামানদিস্তা দিয়ে বারবার আঘাত করে। এর পরে গুদামের রান্নার কাজে ব্যবহৃত ওই হামানদিস্তা একটি ঝোপঝাড়ের নীচে ফেলে দেয় সে। ওই মহিলাকে টেনেহিঁচড়ে নর্দমার কাছে নিয়ে ফেলে কোন পথে সে পালিয়ে গিয়েছিল তা-ও জানা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পুলিশ খুনের অস্ত্র হিসাবে হামানদিস্তাটি উদ্ধার করেছে।

সপ্তমীর রাতে ব্যাঁটরার দুর্গাদাস সিংহ লেনের একটি নর্দমা থেকে এক মহিলার ক্ষতবিক্ষত, রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ নিশ্চিত হয়, ওই নর্দমার পিছনে যে বেসরকারি টেলিফোন টাওয়ার কোম্পানির গুদাম আছে, তার ভিতরে ধর্ষণ করে মহিলার দেহ নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সন্দেহ করে, ঘটনায় গুদামের এক নিরাপত্তারক্ষী যুক্ত। ঘটনার পর থেকে শ্রীমন্ত ঘোষ নামে ওই যুবক পলাতক ছিল। বর্ধমানের কাটোয়া থেকে তাকে শনিবার গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণ ও খুনের কথা স্বীকার করে ধৃত। রবিবার হাওড়া আদালতে ধৃতকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। এর পরে সোমবার ধৃতকে নিয়ে পুলিশ দুর্গাদাস সিংহ লেনের ওই গুদামে আসে ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য।

এ দিন ঘটনাস্থলে ধৃতকে নিয়ে এলে এলাকায় লোকজনের ভিড় জমে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতকে গুদামের ভিতরে নিয়ে গিয়ে তাকে দেখাতে বলা হয় কী ভাবে, কোন অস্ত্র দিয়ে ওই মহিলাকে আঘাত করা হয়েছিল। অচৈতন্য হওয়ার পরে কী ভাবে দেহটি নর্দমায় ফেলা হয়েছিল দেখাতে বলা হয় তা-ও। পুলিশ সূত্রে খবর, সব কিছুই অভিনয় করে দেখায় ধৃত। পুলিশের দাবি, ঘটনার রাতে সে মহিলার মাথা সজোরে মেঝেতে ঠুকে দেয় বলে স্বীকার করেছে ধৃত। এর পরে ওই মহিলা নিজেকে বাঁচাতে গেলে একটি হামানদিস্তা নিয়ে এসে ধৃত তাঁর মাথায় বারবার আঘাত করতে থাকে। এর পরেই তাঁকে টেনেহিঁচড়ে সে কারখানার গেটের সামনে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছে ধৃত। ওই মহিলা বেঁচে আছেন কি না, তা দেখতে গেটের সামনেই তাঁর মুখে জল ঝাপ্টা দিয়ে দেখে শ্রীমন্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, কোনও সাড়া না পেয়ে ওই মহিলাকে সে নর্দমায় ঠেলে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছে ধৃত।

পুলিশ জানায়, রাতের অন্ধকারে দুর্গাদাস সিংহ লেন দিয়ে গিয়ে নটবর পাল রোড সংলগ্ন একটি বন্ধ কারখানায় পাঁচিল টপকে ঢুকে পড়েছিল শ্রীমন্ত। সেখানেই রক্তমাখা পোশাক ছেড়ে কারখানার বাইরে ঝোলা অন্য শ্রমিকদের লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরে প্রায় দু’ঘণ্টা লুকিয়ে থাকে সে। এর পরে ভোরের আলো ফোটার আগেই টিকিয়াপাড়া স্টেশনে পৌঁছয় ধৃত। সেখান থেকে ট্রেনে উঠে পাঁশকুড়া চলে যায়। সেখান থেকে ট্রেনে হাওড়া স্টেশনে ফিরে এসে বর্ধমানমুখী লোকাল ধরে ধৃত কাটোয়ায় নিজের বাড়ি চলে যায় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। নটবর পাল রোড সংলগ্ন কারখানাটি থেকে রক্ত মাখা পোশাক উদ্ধার করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rape Case Reconstruction Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE