Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

টেস্টে ছাড় অনুত্তীর্ণদের

টেস্টে অনুত্তীর্ণদের ছাড় নয়— সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্কুল। কিন্তু বিধায়কের সুপারিশে তা গেল পাল্টে!

প্র্তীকী ছবি

প্র্তীকী ছবি

সুব্রত জানা
সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:১৭
Share: Save:

টেস্টে অনুত্তীর্ণদের ছাড় নয়— সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্কুল। কিন্তু বিধায়কের সুপারিশে তা গেল পাল্টে!

হাওড়ার সাঁকরাইলের রঘুদেববাটী সাধারণের বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্টে অনুত্তীর্ণ ২৪ জন পড়ুয়াই বিধায়ক শীতল সর্দারের জন্য আগামী বছরের ওই দুই পরীক্ষায় বসার ছাড়পত্র পেয়ে গেল। ওই ছাত্রদের নিয়ে গত শনিবার স্কুলে ঢুকে বিধায়ক ওই সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর ওই আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। তাঁর দলেরই একাংশ এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা স্কুলে পোস্টার মেরেছেন।

বিধায়ক অবশ্য তাঁর আচরণ নিয়ে আপত্তির কিছু দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমি জনপ্রতিনিধি। অনেকের কথা রাখতে হয়। তাই যে সব পড়ুয়া টেস্টে ফেল করেছে বলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে বসতে পারবে না, তাদের একটা বছর নষ্ট হবে। তাই শিক্ষকদের অনুরোধ করেছিলাম পাশ করিয়ে দিতে।’’

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বছর মাধ্যমিকের জন্য ২৭০ জন এবং উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য ২৪২ জন টেস্ট পরীক্ষা দেয়। সম্প্রতি ফল প্রকাশ হয়। দেখা যায়, দুই স্তরে ১২ জন করে মোট ২৪ জন অনুত্তীর্ণ হয়েছে। স্কুল সিদ্ধান্ত নেয়, অনুত্তীর্ণদের ওই দুই পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। ওই ছাত্রেরা বিধায়ক শীতলবাবুর দ্বারস্থ হন। গত শনিবার বিধায়ক ওই ছাত্রদের নিয়ে স্কুলে এসে তাদের দুই পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার সুপারিশ করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিষয়টি অন্য শিক্ষকদের জানান।। শীতলবাবুর অনুরোধে শেষমেশ ওই ছাত্রদের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম ফিল-আপের সুযোগ দেওয়া হয়।

এ কথা জানাজানি হতেই স্কুলের গেটে পোস্টার পড়ে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌমেন্দ্রনাথ দলুই বলেন, ‘‘বিধায়কের সুপারিশে আমরা না করতে পারিনি। বিধায়ক লিখিত ভাবে ওই সুপারিশ করেন।’’ গোটা বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি দিলীপ হাজরা। তিনি বলেন, ‘‘অনুত্তীর্ণদের কোনও ভাবেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে বসার সুযোগ দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিস । কিন্তু আমার অনুপস্থিতিতে বিধায়ক এসে শিক্ষকদের দিয়ে ওই কাজ করালেন।’’

হাওড়া সদর তৃণমূলের শিক্ষা সেলের সভাপতি রণজিৎ দাসও মনে করছেন, বিধায়ক ঠিক কাজ করেননি। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনে জেতার জন্য বিধায়ক এইসব করছেন। পড়ুয়াদের পাশ-ফেল করা নিয়ে বিধায়কের নাক গলানো ঠিক নয়।’’ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা পরিদর্শক শান্তনু সিংহ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Academics TMC Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE