সঙ্কটে: প্রায় বুজিয়ে ফেলা এই পুকুর নিয়েই অভিযোগ উঠেছে প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। উত্তরপাড়ায় ছবি তুলেছেন দীপঙ্কর দে
সময় গড়াতেই ফিরে এল পুকুর ভরাটের সেই পুরনো ছবি।
বছর দুয়েক আগে ভোটে জিতে পুরবোর্ড গঠনের পরে উত্তরপাড়ার বর্তমান পুরপ্রধান দিলীপ যাদব অসাধু প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ সংক্রান্ত বড় বড় হোর্ডিং পড়েছিল শহরে। কিছু ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হতে দেখে আশ্বস্ত হয়েছিলেন পুর এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু সময় গড়াতেই ফের শহরে প্রোমোটার-দৌরাত্ম্য জাঁকিয়ে বসেছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। শহরের এক প্রভাবশালী প্রোমোটার টিন দিয়ে আড়াল করে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বি কে স্ট্রিটে এক সঙ্গে দু’টি পুকুর বোজানোয় হাত দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলছেন ওই এলাকারই বাসিন্দারা।
এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ‘‘আগে এইসব পুকুরে এলাকার বাচ্চারা মাছ ধরত। মানুষের জীবিকার প্রশ্নেও পুকুরগুলির ভূমিকা ছিল। কিন্তু এখন আর পুরসভা সে ভাবে নজর দেয় না। সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছে প্রোমোটার। আমরা বিষয়টি এলাকার কাউন্সিলরকে জানাব।’’ আরও কয়েক জনের ক্ষোভ, ‘‘একেই শহরে পুকুরের সংখ্যা কমছে। আরও দু’টি পুকুর কমে গেলে অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় জল জমবে। নিকাশির হাল আরও করুণ হবে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, কাগজপত্রে দু’টি জমিই পুকুর হিসেবে রয়েছে। যার আয়তন প্রায় দু’বিঘা। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের নারায়ণ মিত্র বলেন, ‘‘দু’টিই কোলেদের পুকুর। শুনেছি ওখানে আবাসন তৈরির জন্য পুকুরের পাড় শক্ত করতে মাটি ফেলা হচ্ছে। পুকুর বোজানো হচ্ছে কিনা, জানি না।’’ পুরপ্রধান বলেন,‘‘আমরা ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট পুকুরের মালিকদের নোটিস পাঠিয়েছি। বিষয়টি মহকুমাশাসকেও জানিয়েছি।’’ কিন্তু পুরপ্রধানের উদ্যোগেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না ওই এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের প্রশ্ন, পুর কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে কী ভাবে পুকুর দু’টি ভরাটের কাজ শুরু হল?
অথচ, কয়েক মাস আগে পর্যন্ত পুকুর নিয়ে পুরসভার সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণে সন্তুষ্ট ছিলেন শহরের বাসিন্দারা। পুরসভা পুকুরগুলির হাল-হকিকত খতিয়ে দেখছিল। পুকুর-সুমারি হয়। মশার বংশবৃদ্ধি রুখতে পুকুর পরিষ্কারে জোর দেওয়া হয়। পুকুর-মালিকদের এ নিয়ে নোটিসও পাঠানো হয়। কিছু ক্ষেত্রে নোটিসেও কাজ না-হওয়ায় পুরসভা নিজেদের উদ্যোগেই পুকুর পরিষ্কার করিয়ে বিল পাঠায় মালিকদের। কিন্তু সময় যেতেই সেই উদ্যোগে ভাটা পড়ে। এর কারণ হিসেবে পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘পুকুরগুলি নিয়ে কাজ করার প্রধান সমস্যা শরিকি ঝামেলা। মামলাও আছে কয়েকটি ক্ষেত্রে। ফলে, পরিকল্পনা মতো কাজ করা যাচ্ছে না। তাই সার্বিক ভাবে শিথিলতা আসে।’’
পুর কর্তৃপক্ষের সেই শিথিলতার সুযোগেই পরিস্থিতি উল্টো খাতে বইছে বলে দাবি শহরবাসীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy