অন্য রাজ্য আগেই নিয়োগ করেছিল। এবার এগিয়ে এল এ রাজ্যও। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা মেনে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজের গতি আনতে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে দু’জন করে কর্মী নিয়োগ করছে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। তাঁরা নির্মাণ সহায়কদের সাহায্য করবেন। যে পদে নিয়োগ হচ্ছে তার নাম বেয়ার ফুট টেকনিশিয়ান। প্রথম পর্যায়ে হাওড়া এবং পুরুলিয়ায় নিয়োগ হবে। পরবর্তী ধাপে অন্য জেলাতে কর্মী নিয়োগ করা হবে। একশো দিনের প্রকল্পে কাজের পরিমাণ বেড়েছে। প্রকল্পে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে পরিকল্পনা তৈরি করেন নির্মাণ সহায়কেরা। ব্লক প্রশাসন থেকে তা অনুমোদিত হওয়ার পরেই কাজ শুরু হয়। সমস্যা হল একেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে মাত্র একজন করে নির্মাণ সহায়ক থাকেন। অথচ পঞ্চায়েতপিছু বছরে গড়ে দেড় কোটি টাকার মতো কাজ হয়। ফলে নির্মাণ সহায়কের উপরে কাজের চাপ বেড়েই চলেছে। নির্মাণ সহায়কেরা যে শুধুমাত্র ১০০ দিনের প্রকল্পে পরিকল্পনা তৈরি করেন তা নয়, তাঁদের অন্যান্য উন্নয়ন মূলক কাজের পরিকল্পনা বা সে সব কাজের তদারকিও করতে হয়। এই অবস্থায় ১০০ দিনের প্রকল্প-সহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজের গতি কমে গিয়েছিল গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে।
কাজের গতি বাড়িয়ে তা সুষ্ঠুভাবে শেষ করতেই নিয়োগ করা হচ্ছে বলে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর। দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, যে দুজন নতুন কর্মী নিয়োগ করা হবে তাঁরা নির্মাণ সহায়ককে পরিকল্পনা তৈরির কাজে সাহায্য করবেন। ১০০ দিনের প্রকল্পের রাজ্য কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার জানান, হাওড়া ও পুরুলিয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
তবে নিয়োগের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, কেবলমাত্র ১০০ দিনের প্রকল্পের সঙ্গে যাঁরা সরাসরি যুক্ত তঁদেরই কর্মী হিসাবে নিয়োগ করা হবে। প্রার্থীকে জবকার্ডধারী হতে হবে এবং ১০০ দিনের প্রকল্পে নিয়মিত কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এমনকী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা সদস্য যাঁরা ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করেছেন তাঁরাও এই পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নিয়োগ কর্মীদের মাসিক বেতন দেওয়া হবে না। ১০০ দিনের প্রকল্পে দক্ষ শ্রমিকদের যে মজুরি দেওয়া হয় সেটাই তাঁদের দেওয়া হবে। একটি স্কিমে যতদিন কাজ হবে ততদিনের জন্য হিসাব করে তাঁরা মজুরি পাবেন। যেহেতু পরিকল্পনা তৈরির ক্ষেত্রে কাজে বিশেষ প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রয়োজন, তাই নির্বাচিত হওয়ার পরে কর্মীদের ৯০ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তার পরে তাঁদের কাজে লাগানো হবে।
১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বেয়ার ফুট টেকনিশিয়ান নিয়োগ করার কথা আগেই কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছিল। বেশ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনে কর্মী নিয়োগ করেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার এতদিন তা করেনি। এর কারণ হিসাবে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা জানান, এ রাজ্যে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার যে পরিকাঠামো আছে তা অন্য রাজ্যে নেই বললেই চলে। ফলে সেইসব রাজ্যকে বাধ্য হয়েই কর্মী নিয়োগ করতে হয়েছে।
এতদিন বাদে তা হলে পশ্চিমবঙ্গে এই পদে নিয়োগ হচ্ছে কেন?
এ বিষয়ে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, এখন কাজের পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে শুধু নির্মাণ সহায়কদের দিয়ে আর চলছে না। যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকার অনেক আগে থেকেই এই পদে নিয়োগের কথা বলে আসছিল তাই সেই সুযোগ এ বার নেওয়া হচ্ছে। এতে টাকা অনেক দ্রুত খরচ করা যাবে। স্কিমের ফাঁক ফোকর এড়ানো যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy