একটা সময় ছিল, যখন তাঁরা দিব্যি আসনে বসে যেতে পারতেন। সে দিন অবশ্য গিয়েছে! ‘সিট’ পাওয়া তো দূর, আরামবাগ বা গোঘাট থেকে ট্রেন যখন তারকেশ্বরে ঢুকছে, তখন মাঝেমধ্যে পা রাখার জায়গাও মেলা ভার। তারকেশ্বর-হাওড়া লাইনের নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, দিনে দিনে যাত্রী বাড়লেও ট্রেনের সংখ্যা না বাড়াতেই এই সমস্যা। তাই তাঁদের দাবি, অফিসের ব্যস্ত সময়ে হাওড়া থেকে না হোক, অন্তত শেওড়াফুলি থেকে তারকেশ্বর পর্যন্ত বাড়তি ট্রেন চালিয়ে সমস্যার সমাধান করুন রেল কর্তৃপক্ষ। সেই মর্মে রেল প্রশাসনের দ্বারস্থও হয়েছে নিত্যযাত্রীদের সংগঠন।
এমনিতেই হাওড়া-তারকেশ্বর শাখায় ট্রেন সংখ্যা বাড়ানোর দাবি দীর্ঘদিনের। তার উপর প্রথমে আরামবাগ এবং তার পরে গোঘাট পর্যন্ত রেলপথ প্রসারিত হওয়ায় তারকেশ্বর, লোকনাথ, বাহিরখণ্ড, হরিপাল— প্রভৃতি জায়গায় নিত্যযাত্রীরা রীতিমতো সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন। ২০১২ সালের জুন মাসে আরামবাগ পর্যন্ত ট্রেন চালু হয়। ২০১৬ সালের জুনে গোঘাট পর্যন্ত ট্রেন চলাচল আরম্ভ হয়।
নিত্যযাত্রীদের সংগঠন তারকেশ্বর লাইন প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের বক্তব্য, হাওড়া থেকে আরামবাগ এবং গোঘাট পর্যন্ত ট্রেন চললেও কার্যত কোনও নতুন ট্রেন বরাদ্দ করা হয়নি। তারকেশ্বর লোকালগুলির যাত্রাপথই আরামবাগ অথবা গোঘাট পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। নিত্যযাত্রী সংগঠনটির সদস্যদের ক্ষোভ, গোঘাট বা আরামবাগ থেকে যখন ট্রেন তারকেশ্বরে ঢোকে, তাতে ওঠার অবস্থা থাকে না। ফলে তারকেশ্বর থেকে দিয়াড়ার যে সব নিত্যযাত্রী কলকাতায় যান, ভিড়ে তাঁদের চিড়েচ্যাপ্টা হতে হয়। অতিরিক্ত ভিড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে।
নিত্যযাত্রী সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হরদাস চক্রবর্তী জানান, সকালের ব্যস্ত সময়ে তারকেশ্বর থেকে অন্তত শেওড়াফুলি পর্যন্ত একটি ট্রেন চালানো হলে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও সামাল দেওয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে শেওড়াফুলিতে নেমে ট্রেন বদল করা যাবে। একই ভাবে বিকেলে হাওড়া থেকে শেওড়াফুলি পর্যন্ত একটি ট্রেনের যাত্রাপথ তারকেশ্বর পর্যন্ত বাড়ানো দরকার। সংগঠনের সদস্য, হরিপালের বাসিন্দা বিমল বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, ‘‘গত তিন দশকে এই শাখায় যাত্রীসংখ্যা বেড়েছে। অথচ সকালের ব্যস্ত সময়ে ট্রেন বাড়ানো হয়নি।’’ সম্প্রতি পূর্ব রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজারের কাছে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠানো হয় ওই সংগঠনের তরফে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘যাত্রীরা আবেদন করলে, নিশ্চয়ই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy