Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
‘দিদিকে বলো’-তে ফোনেও মেটেনি সমস্যা
Didi Ke Bolo

রাস্তার কাজ অসমাপ্ত, ধর্নার হুমকি নেতার

আমতা থানা থেকে বালিচক পর্যন্ত ওই রাস্তাটি প্রায় সাত কিলোমিটার লম্বা। নিজের দলের প্রশাসনের বিরুদ্ধে একান্ত নিরূপায় হয়েই ধর্নায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি জয়ন্তবাবুর।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

নুরুল আবসার
আমতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:০২
Share: Save:

তিনি তৃণমূল নেতা। প্রশাসন চালাচ্ছে তাঁর দল। সেই প্রশাসনেরই রাস্তার কাজে গাফিলতির অভিযোগ তুলে ধর্নায় বসার হুমকি দিলেন আমতা-১ ব্লকের রসপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়ন্ত পোল্যে!এক বছর আগে ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করার পরে বেহাল রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হতে দেখে আশ্বস্ত হয়েছিলেন ওই পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা। কিন্তু এতদিনে কাজ হয়েছে মাত্র এক কিলোমিটারের। অনেক দিন ধরে কাজ বন্ধ। তা শেষ করার দাবি জানিয়ে পঞ্চায়েত সদস্য এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে আমতায় সেচ দফতরের কার্যালয়ের সামনে ধর্নায় বসার হুমকি দিয়েছেন জয়ন্তবাবু। লিখিত ভাবে সে কথা তিনি জানিয়েও দিয়েছেন সেচ দফতর এবং পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে।

আমতা থানা থেকে বালিচক পর্যন্ত ওই রাস্তাটি প্রায় সাত কিলোমিটার লম্বা। নিজের দলের প্রশাসনের বিরুদ্ধে একান্ত নিরূপায় হয়েই ধর্নায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি জয়ন্তবাবুর। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কাজটা শেষ করার জন্য অনেক বার বলা হলেও সেচ দফতর কর্ণপাত করছে না। তাই ধর্নায় বসব ঠিক করেছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত কাজ শুরু হচ্ছে, টানা ধর্না চলবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর খেদ, ‘‘কাজটি শেষ না-হওয়ায় মানুষ অসীম দুর্দশার শিকার হচ্ছেন। যে হেতু, ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করার পরে রাস্তার কাজ শুরু হয়েছিল, আমরাও ঘটা করে প্রচার করেছিলাম। কাজ শেষ না-হওয়ায় জনসাধারণের কাছে আমাদেরই জবাবদিহি করতে হচ্ছে। সেচ দফতরের গাফিলতির দায় আমরা নেব কেন?’’ সেচ দফতরের নিম্ন দামোদর নির্মাণভুক্তি (২)-র উলুবেড়িয়া সাব-ডিভিশনের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, অসুবিধার জন্য কাজটি করা যায়নি। শীঘ্র কাজ শুরু হবে।

দামোদরের বাঁধের উপর দিয়ে ওই রাস্তাটি ২০০৩ সালে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি করা হয়। কিন্তু মেরামতির অভাবে তা বেহাল হয়ে পড়ে। ২০১৩ সালে সেচ দফতর সামান্য মেরামত করে। রাস্তাটি এবড়ো-খেবড়ো হয়ে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে থানা থেকে রসপুরের সাধুখাঁ পাড়া পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার অংশের হাল শোচনীয়।

রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ। স্কুল এবং বেস কিছু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য বালিচক এবং রসপুর পঞ্চায়েতের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এই রাস্তা ব্যবহার করেন। গ্রামবাসীরা বহুবার রাস্তা মেরামতির জন্য সেচ দফতরের কাছে দাবি জানিয়েও কাজ না-হওয়ায় শেষ পর্যন্ত গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করেন এলাকার এক বাসিন্দা। উত্তর আসে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে। নবান্নের নির্দেশে পনেরো দিনের মধ্যে কাজ শুরু করে দেয় সেচ দফতর।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, মাত্র এক কিলোমিটার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। কিছু অংশে আংশিক কাজ হয়েছে। বাকি কাজ হয়ইনি। যে এলাকায় কাজ বাকি, তার সিংহভাগই পড়ে রসপুর পঞ্চায়েতে। রাস্তার কাজ অসম্পূর্ণ থাকার ফলে তাঁরা আরও বিপাকে পড়ছেন। উপপ্রধান বলেন, ‘‘একেই বেহাল রাস্তা। তার উপরে আংশিক যা কাজ হয়েছে, তাতে গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করা যাচ্ছে না। এই রাস্তায় প্রচূর ছোট গাড়ি চলে। বিপদের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Didi ke Bolo TMC Development
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE