Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জেলে ঢুকে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সমীর

শ্রীরামপুরের ঋষি বঙ্কিম সরণির এই জেলে অবশ্য প্রথমবার ঢুকলেন না সমীর।

সমীর সরকার। —নিজস্ব িচত্র

সমীর সরকার। —নিজস্ব িচত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৯ ০১:০০
Share: Save:

মঙ্গলবার আদালতের অলিন্দে সাংবাদিকদের দেখে সাংসদের নাম করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। গ্রেফতারের পরে দিশাহারা দেখালেও নীল শার্ট আর নীল জিনসে সপ্রতিভ ছিলেন সমীর সরকার। এমনকি আদালত থেকে জেলে যাওয়ার সময় পুলিশের জলপাই রঙা গাড়িতে ওঠার সময়ও পুলিশসুলভ তৎপরতা দেখা গিয়েছে তাঁর হাবভাবে। কিন্তু জেলকর্মীদের বয়ান অনুযায়ী, জেলের দরজা পেরিয়ে ভিতরে ঢুকতেই ভেঙে পড়েন কাটমানি-পোস্টার কাণ্ডে ধৃত পুলিশ অফিসার। কেঁদে ফেলেন ঝরঝর করে।

শ্রীরামপুরের ঋষি বঙ্কিম সরণির এই জেলে অবশ্য প্রথমবার ঢুকলেন না সমীর। বছর কয়েক আগে শ্রীরামপুর থানায় কর্মরত থাকাকালীন তদন্তের স্বার্থে আদালতের অনুমতিতে অনেক সময়ই জেলের ভিতরে গিয়ে আসামিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু এবার তাঁর জেল যাত্রার কারণ সম্পূর্ণ আলাদা। সেই সূত্রে এর আগেও তিনি জেলে এসেছেন। কিন্তু জেলের ভিতরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢোকার বর্তমান অভিঘাতই আলাদা। দীর্ঘ টানাপোড়েন চলেছে পুলিশে আর প্রশাসনে।

আদালতের নির্দেশে এ দিন জেল হেফাজতে গেলেও কার্যত টানা পাঁচদিন নিজের পুলিশ ব্যারাকের বাইরে তিনি। গত ২৯ জুলাই রাতে শ্রীরামপুর স্টেশন এবং সংলগ্ন এলাকায় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কাটমানি সংক্রান্ত পোস্টার পড়ে। যে গাড়িতে করে পোস্টার মারা হয়েছিল, সেই গাড়িতে পুলিশ অফিসার সমীরবাবু ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তারপরই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু তিনি তদন্তকারীদের সঙ্গে দেখা করেননি। শ্রীরামপুর থানার পুলিশ তাঁকে নিয়ে আসে দিন পাঁচেক আগে। পুলিশের সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগিতা না করার অজুহাতে তাঁকে টানা এক কাপড়ে থানায় থাকতে হয়। পুলিশের যুক্তি ছিল, তদন্তের স্বার্থে পুলিশ কর্মী হিসেবে তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

জেলকর্মীদের একাংশ জানান, জেলের অন্দরে ঢুকেই তিনি কেঁদে ফেলেন। পরিচয় জানার পরে অবশ্য তাঁকে জেলকর্মীরা সান্ত্বনা দেন। ভিতরে কোনও সমস্যা না হওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয় তাঁকে। জেল কর্মীদের অনুরোধে রাতে সামান্য রুটি তরকারি খান। জেলের বিধি অনুয়ায়ী রাতে গণনার পর প্রতিটি আসামিকে সেলের ভিতরে চলে যেতে হয়। বহু মামলায় বহুজনকে জেলবন্দি করা সমীরবাবুর ক্ষেত্রেও সেই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ জন আসামির সঙ্গে কম্বল ভাগ করে মাটিতে শুতে হয় তাঁকে। বুধবার সকালে খান পাউরুটি। দুপুরে ছিল মাছ-ভাত। আজ বৃহস্পতিবার ফের তাঁকে আদালতে তোলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Bribe Samir Sarkar TMC Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE