Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Dead body

দুই তরুণীর দেহ, ধোঁয়াশা তদন্তে

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাশাপাশি দুই পাড়ায় থাকতেন ওই দুই ছাত্রী। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত ছিল না। দুই ছাত্রীর বাবাই ইটভাটায় কাজ করেন। রিঙ্কিরা এক ভাই এক বোন। শিপ্রারা দুবোন এক ভাই। শিপ্রা ছোট।

শিপ্রা মাখাল ও রিঙ্কি পাত্র

শিপ্রা মাখাল ও রিঙ্কি পাত্র

সুব্রত জানা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০৩:৩৮
Share: Save:

রেল লাইনের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছিল দুই তরুণীর ছিন্নভিন্ন দেহ। শনিবার রাত প্রায় সাড়ে ১০টা নাগাদ উলুবেড়িয়ার পশ্চিম কেবিন এলাকার ঘটনা। মৃতদের পরিচয় জানা গিয়েছে রবিবার সকালে।

জানা গিয়েছে, দুই তরুণীই শ্যামপুরের ডিহিমণ্ডলঘাট এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের একজন রিঙ্কি পাত্র (১৯), শ্যামপুরের সিদ্ধেশ্বরী মহাবিদ্যালয়ের সংস্কৃত অর্নাসের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। অন্য জন শিপ্রা মাখাল ওই কলেজেরই কলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

দুই পরিবারে অবশ্য তেমন যোগাযোগ ছিল না। রেল পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত ৯টা নাগাদ আপ শালিমার-ভূজ এক্সপ্রেসের ধাক্কায় দুই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে মিলেছে একটি ব্যাগ, তার ভিতরে ছিল কিছু জামা কাপড় এবং একটি স্মার্টফোন। যদিও তার সিম ছিল না।

পরিবারের দাবি, রিঙ্কি তিনটি ফোন ব্যবহার করতেন— সেই হিসাবে দু’টি ফোন গায়েব। শিপ্রার ফোনও মেলেনি। ফলে এটি দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা না অন্য কিছু— তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। বাড়ি থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে তাঁদের দেহ উদ্ধার নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাশাপাশি দুই পাড়ায় থাকতেন ওই দুই ছাত্রী। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত ছিল না। দুই ছাত্রীর বাবাই ইটভাটায় কাজ করেন। রিঙ্কিরা এক ভাই এক বোন। শিপ্রারা দুবোন এক ভাই। শিপ্রা ছোট।

রিঙ্কির কাকা শ্যামসুন্দর পাত্র জানান, রিঙ্কির স্তন ক্যানসার ধরা পড়ে ছিল বছ দুয়েক আগে। চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারতে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। তারপর সুস্থও হয়ে গিয়েছিল মেয়ে। শ্যামসুন্দরবাবু বলেন, ‘‘আমরা ওর সম্বন্ধ দেখছিলাম, ভেবেছিলাম এ বার বিয়ে দেব। কিন্তু কী করে এ সব হয়ে গেল!’’

শুক্রবার সকাল থেকেই নিখোঁজ ছিলেন শিপ্রা ও রিঙ্কি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন সকাল ৯টা নাগাদ সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রিঙ্কি। জানিয়েছিলেন, বেলপুকুরে গৃহশিক্ষকের কাছে যাচ্ছেন।

শিপ্রা মাখালের বাবা অরুণ মাখাল বলেন, ‘‘মেয়ে ঘর থেকে বেরিয়েছিল দোকানে যাচ্ছে বলে। কিন্তু তার পর থেকে আর খোঁজ পাইনি।’’ দু’দিন ধরে তিনি বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়ি মেয়েকে খুঁজেছেন বলে দাবি।

রিঙ্কির বাবা রামপ্রসাদ পাত্র অবশ্য জানিয়েছেন, দুপুর পর্যন্ত মেয়ে বাড়ি না ফেরায় ফোন করেছিলেন তাঁরা। তখন রিঙ্কি ‘খড়্গপুর যাচ্ছি’ বলেই ফোন কেটে দেন।
তারপর থেকে আর যোগাযোগ করা যায়নি তাঁর সঙ্গে। বিকেলেই শ্যামপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন রামপ্রসাদবাবু।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন সকালেই হোগালাসী বাস স্ট্যান্ডে একটি সাইকেল গ্যারেজে সাইকেল জমা রাখেন দু’জনে। বলে যান সাইকেল দু’টি বাড়ির লোকদের
দিয়ে দিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dead body Uluberia Railway line
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE