জেরবার: টোটোর দাপটে যানজটের এই ছবি নিত্যদিনের। —নিজস্ব চিত্র
টোটোর দাপটে অতিষ্ঠ শহর। বারে বারেই টোটো নিয়ন্ত্রণে আশ্বাস দিয়েছেন পুরসভার কর্তাব্যক্তিরা। কিন্তু সমাধান দূর অস্ত, সমস্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ। বাইরের টোটো আটকাতে এ বার শহরের টোটো চালকদের সচিত্র পরিচয়পত্র বিলি করেছে শ্রীরামপুর পুরসভা। সম্প্রতি টোটো চালকদের হাতে পরিচয়পত্র তুলে দেওয়া হয়।
পুরসভার এক কর্তা বলেন, ‘‘শহরে টোটোর সংখ্যা অনেকে বেড়ে গিয়েছ। যাতে আর না বাড়ে এবং বাইরের টোটো শহরে ঢোকা বন্ধ করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে। আগে চেষ্টা করেও টোটো বাগে আনা যায়নি। এ নিয়ে আমাদের কাছে অনেক অভিযোগও আসছে। সেই কারণেই টোটো নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সচিত্র পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
তবে এই ব্যবস্থায় কতটা কাজ হবে, তা নিয়ে সংশয়ে সাধারণ মানুষ। সংশয় পুরসভার অন্দরেও। অনেকেরই অভিযোগ, শাসক দলের কিছু নেতা বা কাউন্সিলারের মদতেই টোটো লাগামছাড়া হয়েছে। ফলে তা নিয়ন্ত্রণের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। মাহেশের বাসিন্দা এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘বহু বার কাগজে পড়েছি পুরসভা টোটো নিয়ন্ত্রণে নাকি বদ্ধপরিকর। কিন্তু তার প্রতিফলন দেখিনি।’’ শহরবাসীর একাংশের ক্ষোভ, পুলিশ, পরিবহণ দফতর, পুরসভা— টোটোর লাগাম কারও হাতে নেই। উল্টে রাস্তার নিয়ন্ত্রণ চলে গিয়েছে টোটোর হাতে। জিটি রোড, স্টেশন চত্বর-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা টোটোর জন্য জট পাকিয়ে যাচ্ছে। যত্রতত্র গজিয়ে উঠেছে টোটোস্ট্যান্ড। যেখানে সেখানে যাত্রী তোলা-নামানো চলে।
বাস বা অটো চালকদের অভিযোগ, টোটোর দাপটে তাঁদের নাজেহাল অবস্থা। আগেও বহুবার টোটো নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দিয়ে আখেরে তা কার্যকর করা হয়নি। ফলে এ বারেও আশ্বাসে ভরসা পাওয়া যাচ্ছে না।
বছর খানেক আগে পুর-কর্তৃপক্ষ শহরে টোটো চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করেন। টোটো নথিভুক্ত করা হয়। তাতে হলুদ রং করা হয়। কোন টোটো কোন এলাকার, তা বোঝার জন্য ২৯টি ওয়ার্ড ধরে টোটোতে নম্বর প্লেট লাগানো হয়। প্রায় সাড়ে এগারোশো টোটো নথিভুক্ত করা হয়। পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, নির্দিষ্ট এলাকা ছাড়া টোটো যাতে না চলে এবং বাইরের গাড়ি আটকানো যায়, সেই জন্যই এই ব্যবস্থা। তা কার্যকর করার সময়সীমাও বেধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রিষড়া, রাজ্যধরপুর, শেওড়াফুলি-সহ বিভিন্ন জায়গার টোটো এই শহরে দাপিয়ে বেড়ায়। পুরসভার হিসেবে, প্রায় দু’হাজার টোটো চলে এখানে।
জট কাটাতে স্টেশন সংলগ্ন রাস্তায় এক সময় টোটো চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ। কয়েক মাস ধরে সেই নজরদারি উধাও। ফলে সেখানেও টোটো লাগামহীন। সন্ধ্যার পরে স্টেশন চত্বরে কার্যত পা ফেলার উপায় থাকে না বলে নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy