নতুন: চালুর অপেক্ষায় সুপার স্পেশ্যালিটি। নিজস্ব চিত্র
কাজ প্রায় শেষ। শীঘ্রই চালু হতে চলেছে শ্রীরামপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। প্রশাসন সূত্রের দাবি এমনটাই। তবে প্রথমে বহির্বিভাগ চালু হবে। যে অংশে অন্তর্বিভাগ হবে, সেখানে কাজ বাকি।
শ্রীরামপুর ওয়ালশ রাজ্যের দ্বিতীয় প্রাচীন হাসপাতাল। ডেনমার্কের উপনিবেশ থাকাকালীন শ্রীরামপুরে এই হাসপাতাল তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে এই মহকুমা হাসপাতালে অন্তর্বিভাগে ২৭০টি শয্যা আছে। কোনও সময়েই অন্তর্বিভাগ খালি থাকে না। কোনও কোনও সময় অন্তর্বিভাগে রোগীর সংখ্যা চারশো ছাড়িয়ে যায়। অনেককে তখন মেঝেতে রেখে চিকিৎসা করাতে হয়। শ্রীরামপুর মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার পাশাপাশি সিঙ্গুর, হরিপাল, তারকেশ্বরের মতো জায়গা থেকেও প্রচুর রোগী এখানে চিকিৎসা করাতে আসেন। বহির্বিভাগে গড়ে প্রতিদিন ৮০০-৯০০ রোগীর ভিড় লেগেই থাকে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রীরামপুরে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করেন। ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ২০১৫ সালে ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রথমে বলা হয়েছিল ১৫ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু নানা কারণে কাজে দেরি হয়। গত অগস্ট মাসে সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল, নতুন ভবনে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে শিশু, স্ত্রী-রোগ, সাধারণ, দাঁত এবং চোখ— এই পাঁচটি বহির্বিভাগ চালু করা যাবে। কিন্তু সেই পরিকল্পনাও ফলপ্রসূ হয়নি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, সাত তলা ওই ভবনের এক এবং দোতলায় বহির্বিভাগ থাকবে। শুধু পাঁচটি নয়, সব রোগের বহির্বিভাগই চালু করা যাবে। প্রায় সব বিভাগেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক আছেন। তবে অস্থি-বিশেষজ্ঞ আছেন দু’জন। এই বিভাগে আরও এক জন চিকিৎসক দরকার। হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, ‘‘আউটডোর চালু করার পরিকাঠামো তৈরি। কবে চালু হবে, সেটা স্বাস্থ্য ভবনই ঠিক করবে।’’
এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘এখানে রোগীর চাপ প্রচুর। নতুন ভবনে অন্তর্বিভাগ চালু হলে রোগীকে আর মেঝেতে শুতে হবে না। যত তাড়াতাড়ি তা চালু করা যায়, ততই মঙ্গল।’’ অন্তর্বিভাগে রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থা, ডায়ালিসিস ইউনিট থাকার কথা। আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে চোখের চিকিৎসা হওয়ার কথা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য অপ্রতুল রোগী-সহায়ক পদ নিয়ে চিন্তিত। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এখানে রোগী-সহায়ক থাকার কথা ৯৯ জন। আছেন সাকুল্যে ২৫ জন। সাফাইকর্মীর পদ রয়েছে ৩৫টি। আছেন মাত্র ৯ জন। হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘সুপার স্পেশালিটি চালু হলেও পুরনো ভবনেও চিকিৎসা চলবে। ফলে রোগী-সহায়ক এবং সাফাইকর্মীর সমস্যা মেটানো খুব দরকার। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সবই জানেন।’’
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী জানান, ঝা-চকচকে নয়া ভবন সাফসুতরো রাখার দায়িত্ব কোনও সংস্থাকে দেওয়া হবে। এর টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট সংস্থা ওই দায়িত্ব পাবে। তার পরেই বহির্বিভাগ চালু করা যাবে। তিন থেকে সাত তলায় অন্তর্বিভাগ-সহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য বিভাগ থাকবে। সেখানে কাজ শেষ হয়নি। ওই কাজ চলবে। ওই সব বিভাগ পরে চালু করা হবে। শ্রীরামপুরের চিকিৎসক-বিধায়ক সুদীপ্ত রায় বলেন, ‘‘আশা করছি, শীঘ্রই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চালু হবে। স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে কথাও বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy