Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

হিমাচলে আটকে হুগলির সাত বৃদ্ধ

এ বার হিমাচলপ্রদেশে বেড়াতে গিয়ে তুষারপাতে আটকে পড়েছেন হুগলির শ্রীরামপুরের সেই সাত জন। প্রত্যেকেই ষাটোর্ধ্ব। গত চার দিন দিন ধরে তাঁরা ওই রাজ্যের কেলাংয়ে হোটেলবন্দি

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর: শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৫২
Share: Save:

অবসরের পর সাত বন্ধু শুধুই ঘুরে বেড়ান— বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে। এ বার হিমাচলপ্রদেশে বেড়াতে গিয়ে তুষারপাতে আটকে পড়েছেন হুগলির শ্রীরামপুরের সেই সাত জন।
প্রত্যেকেই ষাটোর্ধ্ব। গত চার দিন দিন ধরে তাঁরা ওই রাজ্যের কেলাংয়ে হোটেলবন্দি। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, খাবার এবং জল প্রায় নিঃশেষ। এই অবস্থায় পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি না হলে কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছন তাঁরা। উদ্বিগ্ন বাড়ির লোকজ‌ন।
সাত জনের মধ্যে কারও বাড়ি শ্রীরামপুরের বটতলায়। কেউ থাকেন পাশেই দে স্ট্রিটে বা চ্যাটার্জি লেনে। পরিবারের লোকেরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের বেড়াবার নেশা। অবসরের পরে অনেকেই ঝাড়া হাত পা। ফলে ঘনঘন বেরিয়ে পড়েন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁরা রওনা হন। হাওড়া থেকে ট্রেনে জলন্ধর, পাঠানকোট হয়ে গাড়িতে কেলাং পৌঁছন শুক্রবার বিকেলে। সেখানে একটি হোটেলে ওঠেন।
মঙ্গলবার ফোনে তাঁরা জানান, শনিবার সকাল থেকেই তুষারপাত শুরু হয়। একটানা তা চলে সোমবার পর্যন্ত। লোডশেডিং হয়ে যায়। জেনারেটর থাকলেও ডিজেল প্রায় শেষ। এখন তুষারপাত বন্ধ হলেও চারদিক বরফে ঢাকা। এ দিন আকাশ পরিষ্কার হয়েছে। কিন্তু রাস্তার উপরে কয়েক ফুট পুরু বরফ জমে রয়েছে।
ওই সাত জনের একজন পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় ফোনে বলেন, ‘‘এতটা পুরু বরফ রাস্তার উপরে জমে আছে যে, রোদ উঠলেও দ্রুত গলে যাওয়া সম্ভব নয়। বরফ কাটলে তবে রাস্তায় গাড়ি চলবে। কিন্তু প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ তো চোখে পড়ছে না।’’
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা জানার পর থেকেই ওই পর্যটকদের বাড়ির লোকেরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। পূর্ণেন্দুবাবু শ্রীরামপুরের চ্যাটার্জি লেনে একটি আবাসনে থাকেন। তাঁর স্ত্রী তাপসীদেবী, মেয়ে অরিত্রা, ভাই দিব্যেন্দুবাবু— সকলেই উদ্বিগ্ন। তাঁরা জানান, পূর্ণেন্দুবাবু বা অন্যদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সব সময় যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন। খাবারও প্রায় শেষ। চার দিনে হোটেল থেকে বেরনোই সম্ভব হয়নি। অরিত্রার কথায়, ‘‘খুব দুশ্চিন্তায় আছি। হিমাচলপ্রদেশ সরকার ওঁদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করুক, এটাই চাইছি।’’
পর্যটক দলের অপর এক সদস্য, শহরের দে স্ট্রিটের বাসিন্দা প্রবীর দে-র আত্মীয় তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যা খবর পেয়েছি, তাতে ওঁদের হোটেলের কাছেই মিলিটারি বেসক্যাম্প আছে। শুনলাম, সেখান থেকে নাকি হেলিকপ্টারে খাবার দিয়ে যেতে পারে। শুনে আশ্বস্ত হয়েছি। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হচ্ছে, চিন্তা তো থাকবেই।’’
তাপসীদেবী বলেন, ‘‘স্বামী ২০১৬ সালে অবসর নিয়েছেন। তার পর থেকে বেড়ানোও বেড়ে গিয়েছে। গত বছরে লে-লাদাখ গিয়েছিলেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে আন্দামানে ঘুরে এসেছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এর আগে নাগপুরের একটা জঙ্গলে গিয়েছিলেন। তিন দিন যোগাযোগ করতে পারিনি। স্বামী এবং ওঁর বন্ধুরা ভীষণ অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়। মাঝেমধ্যে নানা সমস্যা হয়। কিন্তু এমন পরিস্থিতি আগে হয়নি।’’ তিনি জানান, আগামী ৬ অক্টোবর ওই দলের ফেরার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Travel Travel and Tourism Himachal Pradesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE