কাজে তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে চন্দননগরের মেয়র তৃণমূলের রাম চক্রবর্তীর কাছে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে চিঠি দিলেন দলেরই ১৬ জন প্রবীণ কাউন্সিলর। তাঁদের মধ্যে তিন জন বরো চেয়ারম্যান, তিন জন মেয়র পারিষদ।
দীর্ঘদিন ধরেই ওই কাউন্সিলরদের সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষের মতান্তর হচ্ছিল। শুক্রবার ওই চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে এল। বিষয়টি ওই কাউন্সিলররা দলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্তকেও জানিয়েছেন। ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলরদের মধ্যে এক জন বলেন, ‘‘দলের কাছে সম্মান চেয়েছিলাম। আমাদের ক্ষোভ অত্যন্ত সঙ্গত। এ বার যখন পুরবোর্ড তৈরি হল, দল প্রবীণদের ভুলে গেল! কথা বলতে চেয়ে দলের বিভিন্ন স্তরে দরবারও করেছি। কিন্তু আর্জিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এ বার যা বলার দিদিকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বলব।’’ ওই চিঠির প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘‘দলকে পুরো বিষয়টি অবহিত করা হবে। দল যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।’’
দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি কানে এসেছে। দলীয় নেতৃত্ব এবং স্থানীয় বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলব।’’
চন্দননগর পুরসভায় শাসকদলের ২৩ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৬ জনই পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করায় পুরসভায় শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বেআব্রু হয়ে পড়ল বলে মনে করছেন অনেকেই। ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলরদের ক্ষোভ, এখন এমন কাউন্সিলরদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, যাঁদের নানা কারণে পুরভোটে দল টিকিটই দেয়নি। নির্দল হয়ে জিতে তাঁরা দর কষাকষি করে পদ বাগিয়েছেন। এমন কাউন্সিলরকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, যিনি প্রথমবার জিতে এসেছেন। ‘বিদ্রোহী’দের প্রশ্ন, ‘‘আমরা প্রবীণেরা কি তা হলে দলের কেউ নই? দেখি দিদি কী বলেন। এখন আমরা সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।’’
এই পুরসভায় শাসকদলের প্রবীণ কাউন্সিলরদের ক্ষোভ নতুন নয়। তাঁদের তরফে নিজেদের কথা বলতে চেয়ে অতীতে বিভিন্ন সময়ে আবেদন-নিবেদনও করা হয়েছে। কিন্তু সেই আবেদন দল বা পুর কর্তৃপক্ষ সে ভাবে আমল দেননি। তার জেরেই এই পদত্যাগের চিঠি বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। দলেরই কেউ কেউ বলছেন, প্রবীণ কাউন্সিলরদের কথা শুনে তাঁদের ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা হলে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও কাউন্সিলরকে পদত্যাগ করতে হলে সে সংক্রান্ত চিঠি পুর কমিশনার বা মহকুমাশাসককে দেওয়া নিয়ম। এখন দেখার, মেয়র প্রবীণ কাউন্সিলরদের ওই চিঠি নিজের কাছে তাঁদের ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা করেন, না বিধিমাফিক তা যথাস্থানে পাঠিয়ে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy