Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Containment Zone

লকডাউন-বিধি অমান্য চলছেই

হুগলির ‘গণ্ডিবদ্ধ’ ২১টি এলাকায় খাদ্যসামগ্রী-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস মিলছে না বলে আগেই অভিযোগ উঠেছিল।

 দুই বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় এলাকা টিনে ঘিরে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। শনিবার দেবানন্দপুরের স্বর্ণপল্লিতে। ছবি: তাপস ঘোষ

দুই বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় এলাকা টিনে ঘিরে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। শনিবার দেবানন্দপুরের স্বর্ণপল্লিতে। ছবি: তাপস ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ০৪:০২
Share: Save:

ছবিটা পুরো বদলাল না শনিবারেও।

হুগলির ‘গণ্ডিবদ্ধ’ ২১টি এলাকায় খাদ্যসামগ্রী-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস মিলছে না বলে আগেই অভিযোগ উঠেছিল। কিছু এলাকার লোকজন বিধি উড়িয়েই রাস্তায় বেরোচ্ছিলেন। শনিবারেও অনেক জায়গায় একই অভিযোগ, একই ছবি। কিছু এলাকায় পুলিশের নজরদারির বালাই ছিল না বলেও অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ অবশ্য তা মানেনি।

এরই মধ্যে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের মেল মেডিক্যাল এবং প্রসূতি বিভাগের তিন রোগীর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাঁদের শ্রীরামপুর শ্রমজীবী কোভিড হাসপাতালে সরানো হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। ওয়ার্ড দু’টি জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। এ দিন হিন্দমোটরে করোনা আক্রান্ত এক মহিলা মারা গিয়েছেন। তাঁর পরিবার ও পড়শিদের অভিযোগ, চেষ্টা করেও তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো যায়নি। দেহ দ্রুত সৎকারেও প্রশাসনিক খামতি দেখা গিয়েছে। উত্তরপাড়ার পুর-প্রশাসক দিলীপ যাদবের দাবি, ‘‘এ দিনই ওই মহিলার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তাই তাঁকে আগে ভর্তি করানো যায়নি। বিধি এবং সময় মেনেই সৎকার করা হয়েছে।’’

চন্দননগরের ‘গণ্ডিবদ্ধ’ স্ট্র্যান্ড, উর্দিবাজারে দোকানপাট খোলা ছিল। লোকজনের অবাধ আনাগোনাও অব্যাহত। ভদ্রেশ্বরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ‘গণ্ডিবদ্ধ’ এলাকায় পুরসভার তরফে জীবাণুনাশক ছড়ানো হয়। পাশের এলাকাতেও জীবাণুনাশক ছড়ানোর দাবি তোলেন বিজেপি সমর্থকেরা। এ নিয়ে একপ্রস্থ হট্টগোল হয়।

শ্রীরামপুরে ‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় শনিবার ভ্যানে করে কাঁচা আনাজ পৌঁছয়। কিন্তু পাশের শেওড়াফুলি-বৈদ্যবাটী শহরে পৌঁছয়নি। গার্ডরেলের বেড়া সরিয়ে সেখানকার বাসিন্দারা বাজারে যান। বৈদ্যবাটীর রামমোহন সরণি, নেতাজি পল্লি, এপি আঢ্য লেনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি সত্বেও এ দিনও ভ্যানে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছয়নি। বাধ্য হয়ে অনেকেই নির্দেশ উপেক্ষা করে বেরিয়ে পড়েছেন। রামমোহন সরণির বাসিন্দা তপন কুমার বেরা বলেন, ‘‘এখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে কেউ মোটরভ্যান বা টোটোচালক, কেউ রাজমিস্ত্রি বা কাঠমিস্ত্রি। পেটের তাগিদে অনেকেই কাজেও বেরিয়েছেন।’’

পুর-প্রশাসক অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘কাল থেকে আনাজ-মাছ, মুদি সামগ্রী এলাকায় পৌঁছবে। বিক্রেতাদের তালিকা করা হয়েছে।’’ লকডাউন কেমন চলছে, তা দেখতে শনিবার শ্রীরামপুরে আসেন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধিকর্তা সৌমিত্র মোহন। সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও।

উত্তরপাড়ার গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় এ দিনও পুলিশি নজরদারি চোখে পড়েনি। মাস্ক ছাড়াই দিব্য যাতায়াত চলে। অনেকটা একই ছবি চণ্ডীতলা-২ পঞ্চায়েতের বেলেডাঙা এলাকার। সিঙ্গুরের মির্জাপুরের জগৎনগর ‘গণ্ডিবদ্ধ’ হওয়ায় শুক্রবার উষ্মা প্রকাশ করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, সেখানে করোনা রোগী নেই। এ দিন পুলিশ সেখানে গ্রামবাসীদের বিধি মানাতে জোরাজুরির রাস্তায় হাঁটেনি।

ব্যান্ডেলের দেবানন্দপুরের স্বর্ণপল্লি ‘গণ্ডিবদ্ধ’ এলাকার তালিকায় নেই। তবে সেখানে এক দম্পতি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ওই এলাকা টিন দিয়ে ঘিরে দেয় প্রশাসন। ঘেরাটোপে থাকা ২৮টি বাড়িতে এক সপ্তাহের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই দম্পতির সংস্পর্শে আসা ২৮ জনকে নিভৃতবাসে থাকতে বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Containment Zone Hooghly Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE