Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বাধা পেরিয়ে উৎসবে সামিল সাহিদারা

আবাসনের পুজো কমিটির সভাপতি সাহিদা খাতুন ও সম্পাদক পুতুল মাইতি দু’জনেই হুইল চেয়ারে যাতায়াত করে।

শিল্পী: মণ্ডপ সজ্জার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। নিজস্ব চিত্র।

শিল্পী: মণ্ডপ সজ্জার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। নিজস্ব চিত্র।

সুব্রত জানা 
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:০৮
Share: Save:

সাহিদা, মন্টু, ফারুকরা এখন দারুণ ব্যস্ত। দুর্গোৎসবের বেশিদিন বাকি নেই। তার আগে সমস্ত আয়োজন শেষ করতে হবে তো! তাদের এবারের থিম ‘শিশু সুরক্ষা’।

আর পাঁচজন উদ্যোক্তার সঙ্গে কাজে কোনও ফারাক না থাকলেও, এরা সকলেই বিশেষভাবে সক্ষম। এদের মধ্যে কেউ হুইল চেয়ারে যাতায়াত করে কেউ বা ক্রাচের উপর ভর দিয়ে। কেউ আবার কথা বলতে পারে না, মনের ভাব প্রকাশ করে ইশারায়। তাই বলে উৎসবে সামিল হওয়ার উৎসাহে এতটুকু খামতি নেই কারওর। এরা সকলেই থাকে উলুবেড়িয়ার কাঠিলার একটি প্রতিবন্ধী আবাসনে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তৈরি এই আবাসনে প্রায় শতাধিক বিশেষভাবে সক্ষম ছেলেমেয়েরা থাকে। এখানে ওরা পড়াশোনা করার পাশাপাশি হাতের কাজও শেখে। যে কোনও উৎসবে এরা সামিল হয় একসঙ্গে।

আবাসনের পুজো কমিটির সভাপতি সাহিদা খাতুন ও সম্পাদক পুতুল মাইতি দু’জনেই হুইল চেয়ারে যাতায়াত করে। ওদের কথায়, ‘‘আগে পুজোর সময় সকলে যখন মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরতেন আমরা বাড়িতে একা বসে থাকতাম। তাই ২০১৩ সালে আমরা ঠিক করলাম, আমাদের আবাসনেই দুর্গোৎসব পালন করব।’’ সেই মতো আবাসনের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার জন মেরি বাড়ুইকে বিষয়টা জানায়। উনি অনুমতি দেন। তারপর থেকেই এই আবাসনে দুর্গাপুজো শুরু হয়। এই বছর ওদের উৎসব সাত বছরে পা দিল।

আবাসনের পুজো মণ্ডপ প্রতি বছরই সেজে ওঠে নিত্যনতুন ভাবনায়। দুর্গোৎসব পালনের মাধ্যমে সমাজকে বার্তা দেওয়াই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। তাদের এই বছরের ভাবনা, ‘শিশুর সুরক্ষা’। থিম পরিকল্পনায় করেছে মন্টু, ফারুক আর পুর্ণিমা মিলে। থিমের প্রসঙ্গে মন্টু বলে, আমাদের সমাজে অনেক সময়ই শিশুদের উপর নানারকম অত্যাচার চলে। এবার আমরা আমাদের পুজোর মধ্যে দিয়ে শিশুর সুরক্ষা নিয়ে বার্তা দিতে চাই।

এদিন আবাসনে গিয়ে দেখা গেল ক্রাচের উপর ভর দিয়ে হাতে প্যালেট নিয়ে ক্যানভাসে ছবি আঁকছে মন্টু। তাকে সাহায্য করছে ফারুক আর পুর্ণিমা। ফারুকের কথায়, ‘‘আমরা সারা বছর একসঙ্গে থাকি তাই দুর্গোৎসবেও একসঙ্গে আনন্দ করব।’’

প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার জন মেরি বারুই বলেন, পুজোয় বাড়ি গেলে একা একা ঘরে বসে থাকতে হয়। তাই বেশ কয়েকবছর ধরেই ওরা আবাসনে দুর্গোৎসব পালন করছে। ওদের একসঙ্গে আনন্দ করতে দেখে খুব ভাল লাগে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2019 Specially Abled People
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE