Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণে কাজ শুরু আরামবাগে

রাজ্য সড়কটির আরামবাগ থেকে চাঁপাডাঙা ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত চার লেনের করা হচ্ছে। আরামবাগের জয়রামপুরের দিক থেকে গাছ কাটা শুরু হয়েছে।

কাজে-গতি: রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য কাটা হয়েছে গাছ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

কাজে-গতি: রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য কাটা হয়েছে গাছ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

পীযূষ নন্দী 
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১৯
Share: Save:

জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় গতি আনা হয়েছে। দফায় দফায় চলছে জবরদখল উচ্ছেদ। আরামবাগ থেকে কলকাতাগামী রাজ্য সড়কটি সম্প্রসারণ করে চার লেনের করতে শুক্রবার থেকে রাস্তার ধারে গাছ কাটাও শুরু হয়ে গেল। পূর্ত দফতরের তৎপরতায় মানুষ খুশি।

রাজ্য সড়কটির আরামবাগ থেকে চাঁপাডাঙা ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত চার লেনের করা হচ্ছে। আরামবাগের জয়রামপুরের দিক থেকে গাছ কাটা শুরু হয়েছে। পূর্ত দফতরের (নির্মাণ-১) সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড় বলেন, “রাস্তার কাজ শুরু হচ্ছে। ১৭০০ গাছ কাটা হবে। সেই কাজ শুরু হয়েছে। বন দফতরের নির্দেশিকা মতো প্রতি কাটা গাছ-পিছু ৫টি করে মোট ৮৫০০ গাছ লাগাব আমরা। সেই প্রক্রিয়াও চলছে।”

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে আরামবাগ থেকে চাঁপাডাঙা পর্যন্ত রাস্তাটি আছে ২৩ ফুট চওড়া। সেটি চার লেনের মোট ১৩৫ ফুট চওড়া হবে। রাস্তাটির জন্য ১৯৫৮-১৯৫৯ সালে জমি অধিগ্রহণ হয়ে আছে ১০০ ফুট থেকে ৬০০ ফুট পর্যন্ত। আরামবাগ পুরসভা এলাকায় আছে ১০০ ফুট, আবার কাবলে থেকে হরিণখোলা এলাকায় আছে ১২০ ফুট থেকে ৪০০ ফুট, পুরশুড়ার সোদপুর ২২০ ফুট, চাঁপাডাঙ্গায় প্রায় ৬০০ ফুট।

যে সব জায়গায় ১৩৫ ফুট অধিগ্রহণ হয়নি, সে রকম প্রায় ৪৪ একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে অগস্ট মাস থেকে। মোট ৪২০ জন জমির মালিককে শুনানিতে ডাকা হয়েছে। দফায় দফায় শুনানি সেরে ইতিমধ্যে ৫ একর জমি হাতেও এসেছে। এ ছাড়া, আরামবাগ থেকে চাঁপাডাঙা পর্যন্ত যে সব জায়গা জবর-দখল হয়ে গিয়েছে, তেমন মোট ৩ হাজার জনকে নোটিস পাঠানো হয়। তাঁদের অনেকে স্বেচ্ছায় সরে গিয়েছেন। যাঁরা যাননি, তাঁদের নির্মাণ ভেঙে দফায় দফায় উচ্ছেদ করা চলছে। সম্প্রতি আরামবাগ শহর থেকে জয়রামপুর পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার জবরদখল মুক্ত হয়েছে। গাছও কাটা চলছে এই অংশে।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ায় মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে ১২ হাজার কোটি পরিবহণ পরিকাঠামো খাতে খরচ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই আওতায় রাজ্যের অনেকগুলি রাস্তা এবং সেতুর পাশাপাশি আরামবাগ থেকে চাঁপাডাঙা পর্যন্ত রাস্তাটিও চার লেনের করার জন্য ধরা হয়। ওই বছর অক্টোবর মাসের গোড়াতেই পূর্ত দফতর সার্ভের কাজও শুরু করে। প্রকল্পটির জন্য অনুমোদন হয় প্রায় ৪২৭ কোটি টাকা।

রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ। এক দিকে কলকাতা এবং তারকেশ্বর। অন্য দিকে দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলা এবং বর্ধমানের একটা অংশের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। পূর্ত দফতরের হিসেবে, প্রতিদিন বিভিন্ন রুটের বাস ছাড়াও দিনরাত অতিরিক্ত পণ্য এবং বালি-বোঝাই ট্রাক চলাচল করে ১৮-২০ হাজার। দুর্ঘটনা আর যানজট নিত্যদিনের সমস্যা। এই অবস্থায় রাস্তাটি চার লেন হওয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষ খুশি।

পুরশুড়ার সোদপুর এবং মসিনান এলাকায় যে সব জবরদখলকারী ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসনের দাবিতে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এবং ব্লকে অবস্থান, ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তাঁদের তরফে আবেদন করা হয়েছে, রাস্তার জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা বাদে বাকিটা তাঁদের দখলেই যেন থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

State Highway Arambag
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE