দুর্ভোগ: এমন যানজট প্রতিদিনের চেনা ছবি। ফাইল ছবি
বাড়ছে যানবাহন। বাড়ছে যানজট। সমস্যা মেটাতে তাই দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েকে ছয় ‘লেন’-এ সম্প্রসারিত করতে উদ্যোগী হয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। শুরু হয়েছে সমীক্ষার কাজ।
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প অধিকর্তা অরিন্দম হান্ডিক বলেন, ‘‘আশা করছি, ওই সম্প্রসারণের কাজ ২০২০ সালের মধ্যে শুরু করা যাবে। আপাতত প্রস্তুতির কাজ চলছে। এই কাজে আমরা এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। বুঝতে চাইছি তাঁদের চাহিদা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের অনুমতি পেলেই কাজ শুরু হবে।’’
হুগলির ডানকুনি থেকে পূর্ব বর্ধমানের পালসিট পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার বিস্তৃত ওই সড়কটি বর্তমানে চার ‘লেন’-এর। দু’প্রান্তে রয়েছে টোলপ্লাজা। মোটা টাকা টোল দিয়ে ওই রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু তার পরেও নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনো যাবে কিনা, তার নিশ্চয়তা মেলে না। কারণ, যানজট। বিশেষ করে, সিঙ্গুর ছাড়িয়ে যতই কলকাতার দিকে গাড়ি এগোয়, অনেক সময়েই যানজটে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পরে বেশির ভাগ দিনই সিঙ্গুর লাগোয়া কাপাসহাড়িয়ার পর গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। এই যানজটের কারণ মূলত ট্রাক।
সম্প্রতি এডিজি ট্রাফিক বিবেক সহায় পথ নিরাপত্তা নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন ডানকুনিতে। সেই বৈঠকে পুলিশকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়, বালির দিকে নিবেদিতা সেতুর আশপাশে বেআইনি ট্রাক দাঁড়াতে দেওয়া যাবে না দিনের কোনও সময়ে। ওই বৈঠকের পরই ব্যারাকপুর ও হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা ওই পথে কলকাতামুখী ট্রাক দাঁড় করানো বন্ধ করে দেন।
ভিন্ রাজ্যের ট্রাকের পাশাপাশি বর্ধমান, বাঁকুড়া ও বীরভূম থেকেও বহু বালি-পাথর বোঝাই ট্রাক সন্ধ্যায় হুগলি অভিমুখে আসে। তার মধ্যে বহু ট্রাক কলকাতায় ঢোকে। আবার অনেক ট্রাক চলে যায় উত্তর ২৪ পরগনায়। কিন্তু যানজটের আশঙ্কায় দীর্ঘদিন ধরেই সন্ধ্যায় কলকাতায় ট্রাক যেতে দেওয়া হয় না। তার জেরে বহু ট্রাকই হুগলির ডানকুনিতে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে। আবার অনেক ট্রাক এতদিন কিছুটা এগিয়ে বালির মাইতিপাড়া এবং নিবেদিতা সেতুর আগে দাঁড়িয়ে যেত।
কিন্তু ডানকুনিতে পুলিশকর্তার ওই বৈঠকের পরে বহু ট্রাক ডানকুনির আগে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছিলেন চালকেরা। কলকাতায় মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পর পুলিশ কঠোর হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়। আর তাতেই এক্সপ্রেসওয়েতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রমাদ গুনছেন হুগলি জেলা প্রশাসনের কর্তারা। বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও। কাপাসহাড়িয়াতে ট্রাকের ‘লে বাই’ (যেখানে ট্রাক দাঁড়াতে পারে) থাকলেও স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না।
এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণের দাওয়াই বাতলেছেন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে জানান হয়, ওই এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই সময়ের দাবি মেনেই যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এক্সপ্রেসওয়েকে ছয় লেনে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। আপাতত, সেই সংক্রান্ত প্রকল্প তৈরি ও সমীক্ষার কাজ চলছে। এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষদের সঙ্গে নিয়ে বর্ধমান ও হুগলিতে ইতিমধ্যেই বৈঠক হয়ে গিয়েছে। হাওড়ার যে সামান্য অংশ পড়েছে এক্সপ্রেসওয়েতে তার জন্যও বৈঠক হবে। রাস্তায় যানজট এড়াতে দুটি বড় ট্রাক টার্মিনাল হবে ওই পথে। অন্তত ৫০০টি ট্রাক একসঙ্গে রাখা যাবে, এমন বেশ কয়েকটি ‘লে-বাই’ তৈরিরও পরিকল্পনা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy