Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দু’টি শিশুর মৃত্যু, উত্তেজনা হাওড়া জেলা হাসপাতালে

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’টি শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শনিবার উত্তেজনা ছড়াল হাওড়া জেলা হাসপাতালে।

শোকার্ত: সুদীপ কর্মকারের দেহ নিয়ে পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত: সুদীপ কর্মকারের দেহ নিয়ে পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০২:৩০
Share: Save:

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’টি শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শনিবার উত্তেজনা ছড়াল হাওড়া জেলা হাসপাতালে।

দুই শিশুর পরিবার সূত্রে খবর, দু’জনকেই গত বৃহস্পতিবার উলুবেড়িয়া হাসপাতাল থেকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে সময়ে রেফার করা হয়েছিল। এ দিন তাদের মৃত্যুর পরে আত্মীয়েরা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সদের ঘিরে বিক্ষোভও দেখান। ভাঙচুরের চেষ্টাও হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে র‌্যাফ ও পুলিশ বাহিনী নামানো হয়। দুই পরিবারের অভিযোগ, র‌্যাফ ও পুলিশ তাদের প্রায় জোর করে শিশু-সহ হাসপাতাল থেকে বার করে দেয়।

পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার জ্বর নিয়ে সুদীপ কর্মকার নামে এক বছর তিন মাসের শিশুটিকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে যান তার বাবা-মা সুশীল ও সুজাতা কর্মকার। সেখান থেকে শিশুটিকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। শিশুটির পরিজনেদের অভিযোগ, ভর্তির সময়ে যথেষ্ট চনমনে ছিল শিশুটি। শনিবার ভোরে জ্বর আসায় চিকিৎসকেরা ইঞ্জেকশন দেন। তার পরেই সে নেতিয়ে পড়ে। ভোর ৫টা নাগাদ শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই পরিবারকে জানানো হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিজনেরা শিশু বিভাগে ঢুকে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ভাঙচুরের চেষ্টাও হয়। র‌্যাফ ও পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের নীচে নামিয়ে আনে। পরিজনেদের অভিযোগ, শিশুর দেহ জোর করে তুলে দিয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে বার করে দেয়।

মৃতের কাকা সঞ্জীব কর্মকার বলেন, ‘‘শেষ ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই বাচ্চাটা মারা যায়। জানতে চেয়েছিলাম, কী ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ উত্তর দেননি।’’

এর রেশ কাটতে না কাটতেই সকাল ৮টা নাগাদ ওই হাসপাতালে চেঙ্গাইলের বাসিন্দা মাস পাঁচেকের আলিয়া পরভিনের মৃত্যু হয়। শ্বাসকষ্ট নিয়ে সে শিশু বিভাগে ভর্তি ছিল। অভিযোগ, এ দিন সকালে ফের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা আলিয়ার যত্ন নেননি। নার্সরাও মোবাইলে ব্যস্ত ছিলেন। আলিয়ার কাকা শেখ আমিদ বলেন, ‘‘ঠিক মত চিকিৎসা হয়নি। নার্সও ফোনে কথা বলতে ব্যস্ত ছিলেন। ওর মা বারবার ডাকলেও কেউ আসেননি।’’

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’টি শিশু মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় হাসপাতাল চত্বরে আরও র‌্যাফ ও পুলিশ নামানো হয়। তবে অভিযোগ মানতে নারাজ হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘রাতে সিনিয়র এক চিকিৎসক ছিলেন। ২৪ ঘণ্টা ধরে শিশু দু’টির উপরে নজর রাখা হয়েছিল। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানা যায় না। তা-ও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’’

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘সুপারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child Hospital Tension Howrah District Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE