Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

কোভিড শ্মশানের ডোম সংক্রমিত, দাহকাজে জট

হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে একের পর এক চিকিৎসক, নার্স-সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হন।

পিপিই পরে এ ভাবেই কোভিড-আক্রান্ত মৃতদেহ সৎকারের কাজ হচ্ছিল শিবপুর শ্মশানে। নিজস্ব চিত্র

পিপিই পরে এ ভাবেই কোভিড-আক্রান্ত মৃতদেহ সৎকারের কাজ হচ্ছিল শিবপুর শ্মশানে। নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ০২:২৩
Share: Save:

হাসপাতাল, থানার পরে এ বার করোনার হানা শ্মশানেও।

হাওড়ার শিবপুর শ্মশানে এত দিন কলকাতা ও হাওড়ায় করোনায় মৃতদের দেহ সৎকার করা হচ্ছিল। এ বার করোনায় আক্রান্ত হলেন সেই শিবপুর শ্মশানেরই এক ডোম। এর পরেই ওই শ্মশানে হাওড়া পুরসভার সাত শ্মশানকর্মী ও তিন জন ডেথ সাব রেজিস্ট্রার বা ডিএসআরকে হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। বাকি যে কয়েক জন রয়েছেন, তাঁদের দিয়ে প্রত্যেক দিন শ্মশানে আসা একাধিক করোনার মৃতদেহ সৎকার করতে খুবই সমস্যা হবে বলে মনে করছে পুরসভা।

হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে একের পর এক চিকিৎসক, নার্স-সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হন। অনেককে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়। ফলে হাসপাতালটি বন্ধ করে দিতে হয়। করোনায় আক্রান্ত হন হাওড়া থানা, শিবপুর থানা-সহ ডিসি সেন্ট্রালের অফিসের লোকজনও। বাদ যাননি পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারেরাও। অন্তত ৩০ জন পুলিশকর্মীকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়। এখনও থানাগুলির পরিস্থিতি ঠিক হয়নি।

গত ৩০ এপ্রিল হাওড়ায় প্রথম এক মহিলার করোনায় মৃত্যুর পরে শিবপুর শ্মশানঘাটে তাঁর দেহ সৎকার করা হয়। তার পর থেকে ওই শ্মশানটিতেই করোনায় মৃতদের সৎকার হচ্ছে। এর জন্য ডোম-সহ অন্য শ্মশানকর্মীদের পাসোর্নাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট বা পিপিই দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও আক্রান্ত হলেন ওই ডোম। হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, সত্যবালা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ডোমের পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরেই চাঞ্চল্য ছড়ায় শ্মশানের অন্য কর্মীদের মধ্যে।

সোমবার পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এক জন ডোমের করোনা পরীক্ষার ফল পজ়িটিভ এসেছে। তার পর থেকে দু’দফায় ১০ জন কর্মীকে হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, যে তিন জন ডেথ সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন, তাঁদের কোয়রান্টিনে পাঠানোয় শ্মশানে ডেথ রেজিস্টারে মৃতের তথ্য নথিভুক্ত করার কেউ নেই। পাশাপাশি যে তিন জন ডোম এখনও শ্মশানে আছেন, তাঁরাও আতঙ্কিত। কারণ তাঁরাই করোনায় মৃতদের দেহ এত দিন ধরে সৎকার করে এসেছেন। পুরসভার বক্তব্য, ওই তিন জনকে কোয়রান্টিনে না পাঠালে তাঁদেরও সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি ওই তিন জন মিলে কী ভাবে প্রতিদিন সৎকারের কাজ করবেন এবং তাঁদের নথি কে-ই বা নথিভুক্ত করবেন, তা নিয়েও উদ্বেগে পুরসভা।

যদিও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, যে হেতু করোনায় মৃতদের আত্মীয়েরা সৎকারের সময়ে শ্মশানে থাকছেন না, তাই পুরসভার রেজিস্টারে মৃত ব্যক্তির কোনও তথ্য নথিভুক্ত করা হচ্ছে না। পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক চিকিৎসক শুধুমাত্র মোবাইলে মৃতের নাম-ঠিকানা রেখে দিচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE