উলুবেড়িয়ার একটি রেশন দোকানে ডাল বিলি। ছবি: সুব্রত জানা
১৪ জুন থেকে পরিবারপ্রতি এক কিলোগ্রাম করে মুসুর ডাল রেশনে বিলির ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে আমতা-১ ব্লকের একটা বড় অংশে মঙ্গলবারেও তা বিলি হয়নি। ডিলারদের অভিযোগ, কম মুসুর ডাল পাঠানোয় তাঁরা সেটি বিলি করতে পারেননি। বিষয়টি তাঁরা খাদ্য দফতরকে জানিয়েছেন বলে রেশন ডিলারদের দাবি।
রাজ্য সরকারের রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা প্রকল্প (১) এবং (২) বাদে কেন্দ্রীয় সরকারের যে তিন ধরনের রেশন কার্ড আছে তাঁদের বিনা মূল্যে পরিবারপ্রতি মাসে এক কিলোগ্রাম করে মুসুর ডাল দেওয়ার কথা। ইতিমধ্যে সেই ডাল ডিলারদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতর সূত্রের খবর।
কিন্তু আমতা-১ ব্লকের এক ডিলার বলেন, ‘‘আমার কাছে মোট ৬৫৭টি পরিবার আছেন যাঁরা জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী রেশন পান। তাঁদের ডাল দিতে গেলে লাগবে ৬৫৭ কিলোগ্রাম ডাল। কিন্তু আমাকে পাঠানো হয়েছে ৫০০ কিলোগ্রাম ডাল। খাদ্য দফতরে আমি জানিয়ে দিয়েছি গ্রাহককে কম ডাল দিয়ে চোর অপবাদ নিতে পারব না।’’ তাঁর বক্তব্য, ডাল বিলির সময়ে খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের হাজির থাকতে হবে। না হলে ডাল বিলি করা যাবে না। একই বক্তব্য এই ব্লকের বেশিরভাগ ডিলারের।
শ্যামপুর-১ এবং ২ ব্লকের ডিলারদেরও অভিযোগ পরিবারপ্রতি তাঁদের কাছে পাঠানো হয়েছে সাড়ে আটশো গ্রাম করে ডাল। যদিও কম ডালই কিছু কিছু ডিলার বিলি করছেন বলে এই দু’টি ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর। শ্যামপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের ব্লকে ডাল বিলি শুরু হয়েছে। যে ডাল কম পড়েছে তা গ্রাহকদের পরের মাসে দিয়ে দেওয়া হবে বলে খাদ্য দফতরের স্থানীয় আধিকারিকেরা জানিয়ে দিয়েছেন।’’
ডাল কম পাঠানোর অভিযোগ তুলেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের হাওড়া জেলা শাখাও। সংগঠনের জেলা সভাপতি বিকাশ বাগ বলেন, ‘‘সব জায়গায় নয়, তবে কিছু কিছু জায়গায় ডিলারদের কাছে ডাল কম এসেছে। যেখানে পরিমাণমতো ডাল এসেছে সেখানে ডাল বিলি শুরু হয়েছে। কিন্তু যেখানে কম এসেছে সেখানে অনেক ডিলার তা বিলি করেননি। আমরা এই সমস্যাটির কথা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরে জানিয়েছি।’’
ডিলারদের সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়া জেলায় ডিলারদের কাছে কম ডাল এসেছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। তবে তদন্তে দেখা গিয়েছে, সেই অভিযোগ মিথ্যা। প্রতিটি ডিলার পরিমাণ মতো ডাল পেয়েছেন।’’
তাহলে বহু জায়গায় ডাল বিলি হচ্ছে না কেন?
এই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘সমস্যা একটা হয়েছে, তা হল অনেকে গ্রাহক প্রতি এক কিলোগ্রাম করে ডাল দাবি করছেন। এটা নিয়েই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরিবারপ্রতি এক কিলোগ্রাম করে ডাল দেওয়ার কথা। এটা নিয়ে গ্রামে কেউ কেউ অপপ্রচার চালাচ্ছে।’’ আমতা-১ নম্বর ব্লকের ঘটনাটি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে মন্ত্রী জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy