Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

দোকান-বাজারে লাগাম উলুবেড়িয়ায়

মহকুমাশাসক (উলুবেড়িয়া) অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় পুরো লকডাউন থাকছেই। রাজ্য সরকারের নির্দেশ, যে সব এলাকায় সংক্রমণ ঘটেছে তার পাশের এলাকার মাছ-আনাজের বাজার এবং দোকানে লোকসমাগম কমাতে হবে।

সুনসান উলুবেড়িয়া শহর। ছবি: সুব্রত জানা

সুনসান উলুবেড়িয়া শহর। ছবি: সুব্রত জানা

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২০ ০২:৪০
Share: Save:

করোনা পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। এক কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় উলুবেড়িয়া পুরসভার বেশির ভাগ বিভাগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পুর এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োনের (গণ্ডিবদ্ধ) সংখ্যা অবশ্য বাড়েনি। বুধবার থেকে শহরের সব দোকান-বাজারে আংশিক লকডাউন বলবৎ করা হল। ১৪ দিনের জন্য দোকান-বাজার খোলা থাকবে একবেলা (সকাল ৭টা থেকে বেলা ১২টা)। যা নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে শাসকদলের চাপানউতোর শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষ চাইছেন, গণ্ডিবদ্ধ এলাকার পরিসর বাড়ানো হোক।

মহকুমাশাসক (উলুবেড়িয়া) অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় পুরো লকডাউন থাকছেই। রাজ্য সরকারের নির্দেশ, যে সব এলাকায় সংক্রমণ ঘটেছে তার পাশের এলাকার মাছ-আনাজের বাজার এবং দোকানে লোকসমাগম কমাতে হবে। সেই কারণেই গণ্ডিবদ্ধ এলাকার বাইরেও আংশিক লকডাউন করা হল। ওষুধ এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দোকান অবশ্য আগের মতোই খোলা থাকছে। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘যখন খোলা থাকবে সেই সময় বাজারে যাতে সকলে মাস্ক পরে আসেন এবং দূরত্ব-বিধি বজায় রাখতে ভিড় কম করেন সেই বিষয়েও প্রচার করা হবে। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনেই উলুবেড়িয়ায় বাজারগুলি বিকেলে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। উদ্দেশ্য, সংক্রমণ যাতে না-ছড়ায়।’’

উলুবেড়িয়া পুর এলাকায় ‘গণ্ডিবদ্ধ’ রয়েছে শুধু ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কুশবেড়িয়া মণ্ডলপাড়া। সাধারণ মানুষের দাবি, অন্য কিছু এলাকায় আরও বহু মানুষ আক্রান্ত। তাই গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বাড়িয়ে সেইসব জায়গায় লকডাউন জারির।

পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ পাল্টা জানায়, অন্য এলাকাগুলিতে যে সব বাড়িতে সংক্রমণ ঘটেছে, সেই সব বাড়ি ‘সিল’ করা হয়েছে। তাই গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বাড়ানোর দরকার নেই। কিন্তু হঠাৎ দোকান-বাজারগুলিতে আংশিক লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা।

বিরোধীদের অভিযোগ, সরকার করোনা প্রতিরোধে আসল ব্যবস্থা গ্রহণ না-করে বারবার লকডাউন ঘোষণার মধ্যে দিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। বেশি করে করোনা পরীক্ষা এবং সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করারও দাবি উঠেছে।

পুরসভার বিদায়ী বোর্ডের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সাবিরুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘আমরা বিরোধীরা করোনা প্রতিরোধে সরকারের পাশে থাকতে প্রস্তুত। কিন্তু সরকার বিরোধীদের আমল দিতে নারাজ। নিজের মতেই সব কিছু করতে গিয়ে মানুষকে ভুল পথে চালিত করছে। গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বাড়ল না অথচ বাজারগুলিতে আংশিক লকডাউন হয়ে গেল। তা হলে শহরে সংক্রমণের প্রকৃত পরিস্থিতি কী, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।’’

বিরোধীদের এই সমালোচনাকে অস্থিরতা সৃষ্টির ‘অপচেষ্টা’ বলে মনে করছে তৃণমূল। জেলা (গ্রামীণ) তৃণমূল সভাপতি তথা উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায়ের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে এই অতিমারির মোকাবিলা করতে নেমেছে স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন। যখন যেটা প্রয়োজন সেটা করা হচ্ছে। এমন সময়ে অবান্তর সমালোচনা না করে বিরোধীদেরও উচিত তাঁদের নিজেদের মতো করে মানুষের পাশে থাকা।’’

বেশি নমুনা পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিকাঠামো পর্যাপ্ত করার বিষয়ে বিরোধীরা যে দাবি করেছেন সে বিষয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশ মেনে শুধুমাত্র যাঁদের উপসর্গ আছে তাঁদেরই নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। উলুবেড়িয়ায় করোনা হাসপাতালের সংখ্যাও যথেষ্ট বলে দাবি করেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা।

এক কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় গত সোমবার থেকে পুরসভায় স্বাস্থ্য, জল, বিদ্যুতের মতো অত্যাবশ্যকীয় বিভাগগুলিই শুধু রয়েছে। বাকি সব বিভাগ আপাতত সাত দিনের জন্য বন্ধ। পুরভবনকে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি যে সব কর্মীর সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে বলে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Covid-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE